প্রধান সূচি

তিন বছরেও নির্মিত হয়নি স্বরূপকাঠীর গুয়ারেখা ভরতকাঠি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের ভবন

তিন বছর পার হয়ে গেলেও নির্মিত হয়নি পিরোজপুরের নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠী) উপজেলার গুয়ারেখা ভরতকাঠি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের নতুন ভবন।
ঠিকাদারের গাফলাতিতে ১ কোটি ৩৬ লাখ টাকা ব্যয়ের একতলা নতুন ভবনের নির্মান কাজ পরে রয়েছে। কার্যাদেশ পাওয়ার পরা ৩ বছরে কাজের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান একটি মাত্র বেইজমেন্ট পিলার গেঁথে এবং কিছু নির্মান সামগ্রী ফেলে রেখে আর কাজ করেননি ভবন নির্মানের।
পিরোজপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তর সূত্র জানায়, একাধিকবার চিঠি দিয়ে কাজের তাগিদ দিলেও আমলে নেয়নি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান আমিরন এন্টারপ্রাইজ। গাফলাতি করে কাজ ফেলে রেখেছে ঠিকাদার রফিক গাজী। বিদ্যালয়ের নামে নতুন ভবন বরাদ্দ হওয়া পরও কাজ শুরু না হওয়ায় পুরাতন জড়াজীর্ন ভবনে চলছে পাঠদান কার্যক্রম। এতে ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে শিক্ষক ও শিক্ষার্থীরা।
জানা গেছে, ১৯৫৬ সালে নির্মিত হয় গুয়ারেখা ভরতকাঠি মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়। বিদ্যালয়ের শিক্ষার গুণগত মানসহ সুনাম রয়েছে পরীক্ষার ফলাফলে। একতলা একটি টিনশেড দালান ও দুইটি কাঠের ঘরের মধ্যে চলে বিদ্যালয়ের কার্যক্রম। ওই তিনটি ঘরের মধ্যে একটি ঘরে ছাত্রীদের আবাসিক থাকার জায়গা ও ওয়াশরুম। একটি ঘরে প্রশাসনিক ভবন কার্যক্রম চলে। বাকি একটি কাঠের ঘরে চলে ষষ্ঠ থেকে দশম শ্রেণির শিক্ষার্থীদের ক্লাশ। বর্তমানে দেড় শতাধিক শিক্ষার্থী রয়েছে ওই বিদ্যালয়ে। প্রতিষ্ঠার লগ্ন থেকে ৭০ বছরেও কোন সরকারি অনুদান আসেনি ওই বিদ্যালয়ে। অতীব পুরাতন ওই বিদ্যালয়টি এখন জড়াজীর্ন হয়ে পড়েছে। এরই মধ্যে ঠাসাঠাসি করে বসে চলে বিদ্যালয়ের পাঠদান কার্যক্রম।
বিদ্যালয়ের গণীতের সহকারি শিক্ষক পলাশ কুমার মৈত্র বলেন, এখানে দিন দিন শিক্ষার্থীর সংখ্যা বাড়ছে। একটি পুরাতন টিনশেড ঘরে বসে শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে হচ্ছে। তারা চার বছর পূর্বে একটি ভবন বরাদ্দ পেলেও তার কাজ এখনো শুরু হয়নি। তাই নিরুপায় হয়ে পুরাতন জরাজীর্ন নড়বড়ে টিনশেড ঘরের মধ্যেই শিক্ষার্থীদের পাঠদান করাতে হচ্ছে। এখানে বর্ষার সময় ক্লাশে বৃষ্টির পানি পড়ে কদমাক্ত হয়ে যায় মেজে। এছাড়া বর্ষা মৌসুমে ক্লাশে বাড়ে সাপ আতঙ্ক। শ্রেণিকক্ষ সংকটে শিক্ষক শিক্ষার্থীদের বসতে খুবই কষ্ট হচ্ছে।
বিদ্যালয়ের ম্যানেজিং কমিটির সদস্য আব্দুল হালিম শেখ বলেন, তাদের বিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ৭০ বছরে কোন সরকারি বরাদ্দ আসেনি। অসহায় অবস্থায় এ স্কুলটি। এখানে রয়েছে ছাত্রীদের আবাসিক থাকার জায়গা। সাবেক মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিমের চেষ্টায় বিদ্যালয়ে চারতলা ফাউন্ডেশনের একটি একতলা ভবন বরাদ্দ হয়েছে। গত তিন বছর পূর্বে কাজের টেন্ডার হয়েছে। ২০২৩ সালের ৪ ফেব্রæয়ারি তৎকালীন মৎস্য ও প্রাণীসম্পদ মন্ত্রী শ ম রেজাউল করিম নির্মান কাজের ভিত্তিপ্রস্থর স্থাপন করেন।
তবে ভবনটি নির্মিত না হওয়ার কারণে শিক্ষক শিক্ষার্থীরা বসতে পারেনা। লেখা পড়ার চরম ব্যাঘাত ঘটছে। বৃষ্টির দিনে টিনের চাল থেকে পানি পড়ে। ঝড় বাতাসে থাকতে হয় আরো আতঙ্কে।
পিরোজপুর শিক্ষা প্রকৌশল অধিদপ্তরের প্রকৌশলি মো. জহিরুল ইসলাম জানান, ওই বিদ্যালয়ের টেন্ডার হয়েছে। তবে টেন্ডারের ওই কাজের দেখভাল করেন অফিসের উপ-সহকারি প্রকৌশলি মো. জিয়াউল হাসান। তাই এ বিষয়ে তিনি ভালো বলতে পারবেন।
উপ-সহকারি প্রকৌশলি মো. জিয়াউল হাসান জানান, পিরোজপুরের আমিরন এন্টারপ্রাইজের ঠিকাদার মো. রফিক গাজী ওই ভবন নির্মানের কাজ পেয়েছেন। গত ২০২১ সালের ১০ মার্চ ১ কোটি ৩৬ লাখ ৩২ হাজার ২২১ টাকা বরাদ্দে ভবন নির্মানের কার্যাদেশ পেয়েছে আমিরন এন্টারপ্রাইজ। যে কাজের মেয়াদ ছিল এক বছর। ভবন নির্মানের পূর্বে একটি টেষ্ট পিলার গেঁথে কাজ ফেলে রেখেছে প্রায় তিন বছর। কাজ করানোর জন্য ঠিকাদারকে একাধিকবার চিঠি দেয়া হয়েছে। গাফলাতি করে তারা কাজ ফেলে রেখেছে। এখন কাজের মেয়াদ শেষ।
এ বিষয়ে আমিরন এন্টারপ্রাইজের স্বত্বাধিকারি মো. রফিক গাজী বলেন, কাজের টেন্ডারের পরপরই নির্মান সামগ্রীর দাম বেড়ে গেছে। তাছাড়া আমি শারীরিকভাবে অসুস্থ থাকায় সময়মতো ভবনের নির্মান কাজ করতে পারিনি।






উত্তর দিন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.