ভান্ডরিয়ায় মায়ের মৃতদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষা কেন্দ্রে মেয়ে শারমিন
পিরোজপুরের ভান্ডরিয়ায় রবিবার এইচএসসি পরীক্ষা শুরুর দিনে মা শিউলি বেগমের মৃতদেহ বাড়িতে রেখে পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করেছে শারমিন আক্তার নামে এক পরিক্ষার্থী। সে উপজেলার গৌরীপুর ইউনিয়নের ৬নং ওয়ার্ডের উত্তর পৈকখালী গ্রামে ফারুক ফকিরের ছোট মেয়ে এবং ভান্ডারিয়া সরকারি কলেজের মানবিক বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী।
মজিদা বেগম মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রের ১০১নং কক্ষে এ হৃদয় বিদারক ঘটনাটি ঘটে। এ ঘটনায় পরীক্ষা কেন্দ্রে শোকের ছায়া নেমে আসে। স্ত্রীর মৃত্যুতে নির্বাক স্বামী ফারুক ফকিরও।
পরীক্ষার্থী শারমিন আক্তারের চাচা আব্দুল মালেক ফকির জানান, শারমিনের মা দীর্ঘদিন ধরে লিভার ও কিডনি রোগে আক্রান্ত ছিল। শনিবার রাত ২টা ২০ মিনিটে ঢাকার প্রাইম হাসপাতালে সে মারা যায়। সকাল ১০টায় মৃতদেহ বাড়িতে নিয়ে আসা হয়েছে। মায়ের মৃত্যুতে মেয়ে শারমিন পরীক্ষায় অংশ না নেয়ার সিদ্ধান্ত নিলেও পরিবার এবং স্বজনদের অনুরোধে মায়ের মৃতদেহ বাড়িতে রেখে এইচএসসি পরিক্ষায় অংশ নেয় সে।
উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার মো. জহিরুল ইসলাম জানান, ঘটনাটি আসলেই দু:খজনক। সহপাঠী ও পরীক্ষা কেন্দ্র সচিবদের সহযোগিতায় সে পরীক্ষা দেয়। এ ঘটনায় আমরা সবাই শোকাহত।
ভান্ডরিয়া সরকারি কলেজের অধ্যক্ষ প্রফেসর আমানউল্লাহ খান জানান, মেয়েটি আমাদের কলেজের মানবিক বিভাগের মেধাবী শিক্ষার্থী। মায়ের মৃত্যুতে তাকে মানষিক সাপোর্ট দেওয়ার জন্য আমিসহ আমাদের কলেজের শিক্ষকবৃন্দ সর্বাত্মকভাবে সহযোগিতা করেছি। সে মজিদা বেগম মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রে অংশ নেওয়ায় আমি নিজে বেশ কয়েকবার গিয়ে তাকে সান্তনা দিয়েছি। যাতে পরীক্ষা বন্ধ না করে।
মজিদা বেগম মহিলা বিশ্ববিদ্যালয় কলেজ পরীক্ষা কেন্দ্রের কেন্দ্র সচিব কলেজের ভারপ্রাপ্ত অধ্যক্ষ মো. আবু জাফর জানান, মেয়েটিকে আমরা যথাসম্ভব মনোবল দেয়ার চেষ্টা করছি। যাতে সে পরীক্ষা শেষ পর্যন্ত চালিয়ে যেতে পারে।
এদিকে, শোকাহত পরিবারের সিদ্ধান্ত অনুযায়ী মেয়ে পরীক্ষা শেষে বাড়িতে আসার পর মৃতের লাশ দাফন করা হয়।