বাগেরহাটের খান জাহান (রহ:) এর মাজার দিঘির পুরুষ কুমিরের মৃত্যু
বাগেরহাটের ঐতিহাসিক হযরত খান জাহান (রহ:) এর মাজার সংলগ্ন দিঘিতে থাকা দুটি কুমিরের একটি মারা গেছে। আজ বৃহস্পতিবার সন্ধ্যায় প্রশাসনের নির্দেশে দিঘি থেকে কুমিরের মরদেহটি উপরে ওঠানো হয়। এর আগে দুপুরের দিকে দিঘির দক্ষিণ-পশ্চিম কোনে পুরুষ (বড়) কুমিরটির মরদেহ ভাসতে দেখেন স্থানীয়রা। খবর পেয়ে পুলিশ, প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তর, উপজেলা প্রশাসন, মাজার কর্তৃপক্ষ, খাদেমসহ দর্শনার্থীরা মাজার প্রাঙ্গণে ভীড় করেন। কুমিরের মৃত্যুর কারণ জানতে ময়না তদন্ত করা হবে বলে জানিয়েছেন প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা. লুৎফর রহমান।
এদিকে দিঘির কুমিরের মৃত্যু নিয়ে খাদেম, ফকির ও স্থানীয়দের পক্ষ থেকে বিভিন্ন অভিযোগ উঠেছে। চেতনা নাশক ও ঘুমের ওষুধ খাইয়ে দীর্ঘদিন এক পাড়ে আটকে রাখার অভিযোগ করেছেন কয়েকজন।
ফকির দারা নামের স্থানীয় এক ব্যক্তি অভিযোগ করেন, এখানে কুমিরকে ঘুমের বড়ি খাইয়ে বশ করা হয়। শেষ ৫ ছয় মাস ধরে এই কুমির দিঘির দক্ষিণ-পশ্চিম পাড়ের দিঘি সংলগ্ন এফ এম মোস্তফা ফকিরের বাড়ির পুকুরে ছিল। দীর্ঘদিন কুমির এক জায়গায় থাকে না। ওষুধ দিয়ে তারা ব্যবসার জন্য কুমিরটিকে আটকে রেখেছিল।
মাজারের প্রধান খাদেম ফকির শের আলী বলেন, কুমিরগুলো আসলে দিঘির প্রাণ ছিল। কিন্তু কিছু অসাধু ব্যক্তি এই কুমিরকে টাকা কামানোর মাধ্যম হিসেবে ব্যবহার করতেন। কুমিরকে নিজ এলাকায় আটকে রেখে দর্শনার্থী ও ভক্তদের কাছ থেকে টাকা নেওয়া হতো। ৬/৭ মাস ধরে কুমিরটিকে একজনের বাড়ির পুকুরে আটকে রাখা হয়েছিল। এতদিন ধরে কুমির এক জায়গায় থাকে না। আমরা এ বিষয়ে বিভিন্ন সময়ে অভিযোগও করেছি। এই কুমিরটিকে মেরে ফেলা হয়েছে। কুমিরের মৃত্যুর সুষ্ঠ তদন্ত ও বিচার দাবি করেন এই খাদেম।
প্রাণিসম্পদ অধিদপ্তরের খুলনা বিভাগীয় পরিচালক ডা. লুৎফর রহমান বলেন, কুমিরটি তিন বছর আগেও একবার অসুস্থ্য হয়েছিল। তখন আমরা চিকিৎসা দিয়েছিলাম। এরপরে মোটামুটি ভাল ছিল। আমরা কুমিরের মরদেহের ময়না তদন্ত করবো। মৃত্যুর কারণ অনুসন্ধানের চেষ্টা করব।
বাগেরহাট মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) কে এম আজিজুল ইসলাম বলেন, খবর পেয়ে আমরা ঘটনাস্থলে এসেছি। মাদরাজ থেকে আনা দুটি কুমিরের পুরুষ কুমিরটি মারা গেছে। এখানে খাদেমদের অভিযোগ রয়েছে, আমরা তদন্ত করছি। এছাড়া কুমিরের ময়না তদন্ত করা হবে। ময়না তদন্ত প্রতিবেদন পেলে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে।