প্রধান সূচি

জাতিসংঘ মানবাধিকার ইস্যুতে পক্ষপাতিত্ব করছে

বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বিভিন্ন পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। এসব অনুষ্ঠানে বক্তারা বলেন, উন্নত বিশ্বের দেশগুলো মানবাধিকারকে অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করছে। আর জাতিসংঘও মানবাধিকার ইস্যুতে পক্ষপাতিত্ব করছে।

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয় : মানবাধিকারের ইস্যুতে জাতিসংঘ পক্ষপাতিত্ব করছে বলে মন্তব্য করেছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের কলা ও মানববিদ্যা অনুষদের সাবেক ডিন অধ্যাপক ড. সেকান্দর চৌধুরী। রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকালে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে প্রগতিশীল শিক্ষক সমাজের আয়োজিত সমাবেশে তিনি এ মন্তব্য করেন।

বঙ্গবন্ধু চত্বরে আয়োজিত সমাবেশে তিনি বলেন, গণতন্ত্রের নামে একটি দল যাত্রীবাহী বাসে আগুন দিয়ে মানুষ পোড়াচ্ছে, এটা স্পষ্ট মানবাধিকার লঙ্ঘন। তবে এ ব্যাপারে বিশ্ব মোড়লরা কথা বলছে না। জাতিসংঘও মানবাধিকার ইস্যুতে পক্ষপাতিত্ব করছে।

ড. সেকান্দর চৌধুরী বলেন, গণতন্ত্রের নামে মানুষ হত্যা অবশ্যই মানবাধিকার লঙ্ঘন। দেশের উন্নয়নে শেখ হাসিনাকে সহযোগিতা করার জন্য সবাইকে আহ্বান জানান তিনি।

জাহাঙ্গীর নগর বিশ্ববিদ্যালয় : জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. মোঃ নূরুল আলম বলেছেন, রাষ্ট্রীয় দায়িত্বে অধিষ্ঠিত হওয়ার একমাত্র মাধ্যম নির্বাচন। গণতান্ত্রিক রাষ্ট্র ব্যবস্থায় নির্বাচনে অংশগ্রহণ করে বিজয় লাভের মাধ্যমে সরকার গঠন বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত ও গ্রহণযোগ্য মাধ্যম। গণতন্ত্র চর্চা ও অনুশীলনে এর ব্যতিক্রম কখনই কাম্য নয়। জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে আজ বঙ্গবন্ধু শিক্ষক পরিষদের আয়োজনে ‘একুশ শতকের বাংলাদেশ বিনির্মাণে উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও নির্বাচন’ শীর্ষক আলোচনা সভায় উপাচার্য এসব কথা বলেন।

তিনি বলেন, উন্নয়ন, গণতন্ত্র ও নির্বাচন এক এবং অভিন্ন। একটিকে বাদ দিয়ে অপরটি চিন্তা করা যায় না। নিজ অর্থায়নে পদ্মাসেতুর মত প্রকল্প সফলভাবে সম্পন্ন হয়েছে শুধুমাত্র প্রধানমন্ত্রীর দৃঢ় ও বলিষ্ঠ নেতৃত্বে। যোগাযোগ ও অন্যান্য ক্ষেত্রে প্রধানমন্ত্রী বিপ্লব ঘটিয়েছেন। মেট্রোরেলসহ অন্যান্য মেগা প্রকল্প বাস্তবায়নের ফলে কোটি কোটি কর্মঘণ্টা বেঁচে যাচ্ছে যা দেশের উন্নয়নকে আরও ত্বরান্বিত করছে।

উপাচার্য বলেন, স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার প্রধান জায়গা বিশ্ববিদ্যালয়। তিনি সকলকে আগামী জাতীয় নির্বাচনে স্মার্ট বাংলাদেশে গঠনে সহযোগী হতে শান্তির পক্ষে ও উন্নয়নের পক্ষে থাকার আহ্বান জানান।

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় : রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. গোলাম সাব্বির সাত্তার বলেন, জ্বালাও-পোড়াও এবং হরতাল-অবরোধ কখনো মানবাধিকার হতে পারে না। বাংলাদেশই একমাত্র দেশ যার জন্মের সময় তার বিরোধীরা সক্রিয় ছিল। তারা এখনো সক্রিয়। তাদের দ্বারাই মানবাধিকার লঙ্ঘিত হচ্ছে।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকালে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডীনস্ কমপ্লেক্সে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত ‘মানবাধিকার: বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিত’ আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

উপাচার্য বলেন, ‘গণতন্ত্র ও মানবাধিকার পরস্পর ঘনিষ্ঠভাবে সম্পর্কিত। গণতন্ত্রের প্রধান লক্ষণ হল মানবাধিকার। মানবাধিকার ছাড়া গণতন্ত্র সম্ভব নয়। এর মাধ্যমে মানুষ নিজের অধিকার সম্পর্কে সচেতন হচ্ছে। সাম্রাজ্যবাদীদের দ্বারা আমাদের গণতন্ত্র ভূলন্ঠিত হচ্ছে। সংবিধানে মানবাধিকারের কথা বলে দেওয়া হয়েছে৷ মানবাধিকার রক্ষার জন্য গণতন্ত্র অপরিহার্য। নির্বাচন অপরিহার্য। সংবিধানকে অস্বীকার করার উপায় নেই। সংবিধান অনুযায়ী নির্বাচন হবে।’ যারা সংবিধান বহির্ভূত কথা বলে তাদের ইশতেহারে মানবাধিকার কতটুকু আছে সে প্রশ্ন রাখেন উপাচার্য।

জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয় : বাংলাদেশের গণতন্ত্রের ধারাবাহিকতা নস্যাৎ করার জন্য বারবার চেষ্টা করা হচ্ছে বলে মন্তব্য করেছেন জাতীয় কবি কাজী নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. সৌমিত্র শেখর। তিনি বলেন, ষড়যন্ত্রের বিরুদ্ধে সবাইকে সজাগ থাকতে হবে। গণতন্ত্র ও উন্নয়ন ধারাবাহিকতাকে অব্যাহত রাখতে না পারলে দেশ সামনের দিকে এগিয়ে যেতে পারবে না।

রোববার (১০ ডিসেম্বর) সকালে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার দিবসে জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়ে ‘মানবাধিকার : বাংলাদেশ ও আন্তর্জাতিক পরিপ্রেক্ষিত’ শীর্ষক সেমিনারে উপাচার্য বলেন, বঙ্গবন্ধুর সোনার বাংলা, স্মার্ট বাংলাদেশের পথে জয়যাত্রা হবে। তাই বাংলাদেশ ও বাঙালির স্বার্থে আগামী নির্বাচনে আওয়ামী লীগকে ক্ষমতায় দেখতে চাই, জননেত্রী শেখ হাসিনাকে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেখতে চাই। সেজন্য যতটুকু কর্তব্য সেটুকু আমরা পালন করবো।

নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসনিক ভবনের কনফারেন্স কক্ষে ক্যাম্পেইন এডভোকেসি প্রোগ্রাম ক্যাপ এই অনুষ্ঠানের আয়োজন করে।

তরুণদের উদ্দেশে ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, এখন নির্বাচনের যে ধারাবাহিকতা চলছে, সংবিধানের যে অনুসরণ চলছে, সেটি অব্যাহত রাখতে হবে।

বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় : আন্তর্জাতিক পর্যায়ে যারা মানবাধিকার লঙ্ঘনের দায়ে দুষ্ট, তারাই মানবাধিকারকে রাজনৈতিক চাপের হাতিয়ার হিসেবে ব্যবহার করছে বলে মন্তব্য করেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিব কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচালক (আইকিউসি) প্রফেসর ড. মোঃ মোতাহার হোসেন। বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাাম্পাসে ক্যাপ আয়োজিত আলোচনা সভায় তিনি এসব কথা বলেন।

এসময় বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার মোঃ সিরাজুল ইসলাম তালুকদার বলেন, উন্নত বিশ্বের দেশগুলো তুলনামূলক দরিদ্র এবং দুর্বল দেশগুলোর ব্যাপারে মানবাধিকার ইস্যুকে বাণিজ্যিক অস্ত্র হিসেবে ব্যবহার করে। যা মানবাধিকার চেতনার পরিপন্থী। বিশ্বে যারা মানবাধিকার নিয়ে সোচ্চার তারাই বেশি মানবাধিকার লঙ্ঘন করছে বলেও মন্তব্য করেন তিনি।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয় : মানবাধিকারে সর্বাধিক গুরুত্বারোপের কারণেই মিয়ানমার থেকে পালিয়ে আসা লাখো রোহিঙ্গা এখনো বাংলাদেশে আশ্রয় পাচ্ছে। বাংলাদেশের দুঃস্থ, নিপীড়িত এবং প্রান্তিক মানুষের মানবাধিকার প্রতিষ্ঠায় তাঁর গৃহীত পদক্ষেপগুলো অনন্য।

রবীন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের রবি সাংস্কৃতিক কেন্দ্রের উদ্যোগে প্রেস এক্সপ্রেসের সহযোগিতায় বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে আয়োজিত সেমিনারে এসব কথা বলেন উপাচার্য প্রফেসর ড. মোঃ শাহ্ আজম। তিনি বলেন, মানুষ ব্যক্তিগত ও সামাজিকভাবে তার অর্থনৈতিক এবং সাংস্কৃতিক অধিকারচর্চা করতে পারাই মানবাধিকার।

এছাড়া, সিলেট কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়, বরিশাল বিশ্ববিদ্যালয় ও যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে বিশ্ব মানবাধিকার দিবস উপলক্ষে সেমিনারসহ নানা অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়।






উত্তর দিন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.