পৃথিবী ধ্বংস এ বছরই !
পৃথিবীতে মানুষের বাসের আগে এবং পরে বহু কারণে বিপর্যয়ের মুখোমুখি হয়েছে। মানব সভ্যতাও যে একাধিকবার ধ্বংস হয়ে গেছে তা যেমন বিভিন্ন ধর্মগ্রন্থে উল্লেখ রয়েছে, তেমনি ইতিহাসের পন্ডিতেরাও গবেষণার মাধ্যমে তা স্বীকার করেছেন। এখন প্রশ্ন হচ্ছে তথ্য প্রযুক্তির এই সভ্যতাও কি ধ্বংস হয়ে যাবে ?
মায়ান ক্যালেন্ডার থেকে শুরু করে নষ্ট্রাদামুসের মতো ভবিষ্যতদ্রষ্টারাও বলে গেছেন একবিংশ শতাব্দীর দিকে মানব সভ্যতা বিপর্যয়ের মুখে পড়বে। মানব জাতির মধ্যে অতিরিক্ত অসহিষ্ণুতা এবং হানাহানি তো আছেই, প্রকৃতি ধ্বংসের হুমকিতে পড়ায় আবারও হয়তো নতুন করে লিখতে হবে মানব ইতিহাস।
অবশ্য মায়ান সভ্যতায় মানব জাতির যে ভবিষ্যৎ ক্যালেন্ডার তৈরি করা হয়েছিল সেখানে অর্ধযুগ আগেই দিন গণনা শেষ হয়ে গেছে। সেই হিসেবে হয় মায়ানদের দীর্ঘ দিন গণনায় কিছুটা ভুল থাকতে পারে। আর তা না হলে মায়ান ক্যালেন্ডার মিথ্যে আর নয়তো এই মানব সভ্যতা কিছু সময় বোনাস হিসেবে পেয়েছে।
যদিও হালের বিজ্ঞান সে সব মানতে নারাজ। মানব সভ্যতার শুরু থেকেই তা ধ্বংসের হুমকি এবং ভবিষ্যৎ বাণী নতুন নয়।
সম্প্রতি পৃথিবী ধ্বংসের আশঙ্কার পালে নতুন করে হাওয়া জোগাচ্ছে যিশুর সময়কার ‘ম্যাথিউ জেন মার্ক’ নামের এক বিতর্কিত তত্ত্বের প্রবক্তার বই বুক অব রেভুল্যুশন (Book of Revelation)। বাইবেল’এর নিউ টেসটামেন্ট (New Testament) এর সুত্র ধরে পৃথিবী ধ্বংসের যে সময়কে তিনি ইঙ্গিত করেছেন, একদল বিশেষজ্ঞ গবেষণা করে জানিয়েছেন তা আসলে ২০১৮ সাল।
অর্থাৎ মানব সভ্যতা বিপর্যয়ের মুখোমুখি হবে এ বছরই। বাইবেলে উল্লেখিত বাণী বিশ্লেষণ করে ‘ম্যাথিউ’ এর লেখা বইটির পাঠোধ্যার করে এক দল গবেষক বলছেন, মানুষ এবছরই চূড়ান্ত বিচারের দিনের অর্থাৎ Judgement Day এর মুখোমুখি হবে।
গবেষকেরা পৃথিবী ধ্বংসের দাবি জোড়ালো করতে বইটিতে উল্লেখিত নানা বাণীও সামনে নিয়ে এসেছেন। তারা জানিয়েছেন, যে সময়ের কথা বইটিতে বলা হয়েছে তার অনেক কিছুই হালে মিলে যাচ্ছে।
ম্যাথিউ লেখা প্রাচীন বইটিতে বলা হয়েছে, এই সময়টাতে স্বর্গ ও নরকের মধ্যে ভয়াবহ যুদ্ধ সংঘটিত হবে। সে সময়টিতে ইশ্বরের পুত্র সব ঠিক করবেন। তাকে টানা ৪২ মাস সংকট নিরসনের লক্ষ্যে ক্ষমতা দেয়া হবে।
বইটিতে মানব সভ্যতা বিপর্যয়ে পড়ার আরও বেশ কিছু ইঙ্গিতপূর্ণ বিবরণ রয়েছে। ইশ্বর পুত্রের দলে যারা থাকবেন তারা বেশ কিছুদিন ধরে কিছু সংকেত পেতে থাকবেন। যা এঞ্জেল বা স্বর্গ দূতেরা জানান দিতে থাকবে। সে সব মানুষ বিশ্বের নানা প্রান্তে ছড়িয়ে থাকবে। কিন্তু তাদের অনেকেই মিশে থাকবেন সাধারণ মানুষের কাতারে।
ম্যাথিউ’র বইতে আরও বলা হয়েছে, বিশেষ মানুষেরা কখনও কখনও বিশেষ আওয়াজ বা কন্ঠস্বরও শুনতে পারবেন। ‘বুক অব রেভুল্যুশন’ পরীক্ষা করে গবেষকেরা বলছেন, ৬৬৬ সংখ্যাটা সে সময় খুব দেখা যাবে।
যে সংখ্যাটি আসলে শয়তানের সঙ্গে জড়িত। কিন্তু সেটিকে হিসেবে ধরলে ৪২ মাসের অভ্যুত্থানের সময়কালকেই বোঝায়। আর সংখ্যাটিকে বইয়ের সুত্রের সঙ্গে আরও একটু হিসাব-নিকেশ করলে যা বের হয়ে আসে তা ভয়াবহ! চূড়ান্ত বিজয়ের দিনের সুত্রপাত ঘটবে জুনের ২৪ তারিখ। আর সালটি হচ্ছে ২০১৮!
এই আশঙ্কার সত্যতা তুলে ধরেছিলেন ভবিষ্যতদ্রষ্টা নষ্ট্রাদামুস’ও। ১৬ শতকের এই ভবিষ্যতদ্রষ্টা যা বলেছিলেন তার প্রায় সবই মিলে গেছে। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ থেকে জাপানে পরমাণু বোমা নিক্ষেপ, ব্রিটেনের যুবরাজ চার্লসের প্রথম স্ত্রী ডায়ানার মৃত্যু, নাৎসি নেতা হিটলারের উত্থান ও পতন ইত্যাদি বর্ণনার সত্যতা ইতিহাসই প্রমাণ করেছে।
নষ্ট্রাদামুসের পরবর্তী সময় সম্পর্কে অর্থাৎ ২০১৮ সালের ভবিষ্যৎ বাণীর কথা যদি ধরা হয় তবে মানব জাতিকে হতাশই হতে হবে। তিনিও তার ভবিষ্যৎ বাণীতে বলেছেন, এই বছর বিরাট এক যুদ্ধ সংঘটিত হবে। যে যুদ্ধ শুধু দুই শক্তিমান দেশের মধ্যেই নয়, ছড়িয়ে পড়বে পুরো পৃথিবীতে।
তার মতে, এই ভয়াবহ যুদ্ধের পর অল্প কয়েকটি দেশ শুধু দুনিয়ায় অবশিষ্ট থাকবে। এছাড়া এই বছরটিতে ভয়াবহ ভূমিকম্প হবে। দেখা দেবে বন্যা এবং বড় সুনামি। বিশ্বের উষ্ণায়নও ভয়াবহ আকার নেবে।
শুধু তাই নয়, সেই অবস্থা থেকে মুক্তি পেতে মানুষকে দীর্ঘ ৮ বছর অপেক্ষা করতে হবে বলেও ভবিষ্যৎ বাণী করেছিলেন নষ্ট্রাদামুস। তার হিসেব মতে, ২০২৫ সালে পৃথিবীতে কিছুটা হলেও শান্তি ফিরে আসবে।
এখন দেখার বিষয় বরাবরের মতোই পৃথিবী ধ্বংসের এসব ভবিষ্যৎ বাণী মিথ্যে হয় কিনা!
