ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য টেকসই উন্নয়ন দরকার ॥ তাসমিমা হোসেন
জাতীয় পার্টি-জেপি’র প্রেসিডিয়াম সদস্য, দৈনিক ইত্তেফাকের ভারপ্রাপ্ত সম্পাদক ও সাবেক সংসদ সদস্য তাসমিমা হোসেন বলেছেন, আমাদের ভাগ্য পরিবর্তনের জন্য টেকসই উন্নয়নই হচ্ছে খুবই কার্যকর। জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি মোকাবেলার জন্য দক্ষিণাঞ্চলে বাঁধ নির্মাণসহ সকল ধরণের অবকাঠামো গড়ে তুলতে হবে দীর্ঘ স্থায়ীভাবে এবং যাতে এ উন্নয়ন কাজ দীর্ঘদিন টিকে থাকে সে ভাবে পরিকল্পনা করে। সাথে গাছ কাঁটার মত পরিবেশ বিনষ্ট হয় এমন কাজ করা থেকে সকলকে বিরত থাকতে হবে।
শনিবার বিকালে পিরোজপুর জেলার ইন্দুরকানি উপজেলায় পৃথক দু’টি সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আরও বলেন, মানুষের দীর্ঘদিনের বদাভ্যাস তথা দুর্নীতির কারণে পরিবেশ নষ্ট হচ্ছে। নদী দুষণ, পলিথিনের যথেচ্ছ ব্যবহার, খাল-বিলে অপরিকল্পিত বাঁধ নির্মাণ, যেখানে-সেখানে চিংড়ির ঘের স্থাপন আমাদের পরিবেশের মারাত্মক ক্ষতিসাধন করেছে। পরিবেশ বাঁচাতে তাই শতবর্ষের ভাবনায় সকল ধরণের উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করা আবশ্যক। এ অঞ্চলের দীর্ঘ ৩২/৩৩ বছর ধরে জাতীয় পার্টি-জেপি’র চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এই সুদূরপ্রসারী উন্নয়ন ভাবনা নিয়েই কাজ করে চলছেন। তিনি ১৭ বছরের মন্ত্রীত্বকালে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও সাবেক রাষ্ট্রপতি এরশাদের সাথে দায়িত্বপালন কালে দেশের এবং গ্রামের অবহেলিত মানুষের ভাগ্য পরিবর্তনে সব সময় নিষ্ঠা, মেধা ও বুদ্ধিবৃত্তি নিয়ে নিজেকে ব্যাপৃত রেখেছেন। তিনি রাজনীতির চেয়ে উন্নয়ন, ঐক্য ও কাজকে প্রাধান্য দিয়েছেন। এ কারণে এলাকা থেকে বারবার সংসদ সদস্য হয়েছেন, বিভিন্ন সরকারের মন্ত্রী সভায় গুরুত্বপূর্ণ পদে আসীন হয়েছেন। দায়িত্ব পালনে সব সময় আনোয়ার হোসেন মঞ্জু জনগণ ও দেশের স্বার্থকে সর্বোচ্চে স্থান দেয়ায় প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা তাঁকে একাধিকবার মন্ত্রী করেছেন। তাসমিমা হোসেন বলেন, জাতীয় সংসদের নির্বাচন নিকটবর্তী হওয়ায় এলাকার মানুষ আবারও আনোয়ার হোসেন মঞ্জুকে সংসদ ও সরকারে আশা করবে এটাই স্বাভাবিক। ইন্দুরকানি এলাকায় আমি এই প্রথমবারের মত এসে বুঝতে পেরেছি ৩২ বছর ধরে ভান্ডারিয়া-কাউখালীর মানুষ যেভাবে তাঁকে (আনোয়ার হোসেন মঞ্জু) আপনজন মনে করেন মাত্র চার বছরে ইন্দুরকানিও তার ব্যতিক্রম নয়। এলাকার মানুষের মাঝে শান্তি-শৃঙ্খলা ফিরে এসেছে, মানুষ উন্নয়নের স্বাদ পাচ্ছে। ইত্তেফাক সম্পাদক আরও বলেন, তিনি সরকারের কোন পদে না থাকলেও এলাকার জন্য প্রবীণদের কল্যাণ, নারী কর্মসংস্থান, নারীদের সংগঠিত করা ও মানসিক উন্নয়ন ঘটানোসহ বিভিন্ন সেবামূলক কাজ করেন। পিরোজপুর শহরে পল্লী কর্মসংস্থান ফাউন্ডেশন-পিকেএসএফ’র সহযোগিতায় রিক’র সাথে যৌথভাবে প্রবীণদের কল্যাণে একটি কাজ দুঃস্থ কল্যাণ সংস্থা বাস্তবায়ন করছে। যা অবকাঠামোগত সুযোগ পেলে ইন্দুরকানিতেও করা হবে। প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা নারী উন্নয়নে ৯৭ সাল থেকে ব্যাপক কাজ করছেন। আমরা জনগণের কাছে আসি তাদের সমস্যা শুনে, অনুধাবন করে সমাধানের উপায় খুঁজে বের করতে। যথাসাধ্য প্রচেষ্টা গ্রহণ করে মানুষের কল্যাণ করার মধ্যদিয়ে পরলোকের শান্তি তথা বেহেস্তে যাওয়ার পথ অনুসন্ধান করা আমাদের উদ্দেশ্য। এই জন্য কর্মের সাথে ধর্ম চর্চ্চা তথা গরীব-দুঃখীর মুখে হাঁসি ফুটানো আমাদের কাজ। আমাদের এমন কিছু করতে হবে যা আগামী প্রজন্মের কাছে শিক্ষনীয় হয়।
দুঃস্থ কল্যাণ সংস্থার উদ্যোগে সংগঠনের ইন্দুরকানি কার্যালয়ের হলরুমে অনুষ্ঠিত এক মতবিনিময় সভায় উপজেলা জাতীয় মহিলা পার্টি (জেপি)’র সভানেত্রী অধ্যাপক শারমীন হোসেনের সভাপতিত্বে আরও বক্তব্য রাখেন ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আতিকুল ইসলাম তালুকদার উজ্জল, ইন্দুরকানি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব আহম্মেদ, অধ্যাপক জাকারিয়া হোসেন, মুক্তিযোদ্ধা মোশাররফ হোসেন, প্রধান শিক্ষিকা সাবেরা সুলতানা, নারী নেত্রী রাবেয়া বেগম ও নিগার সুলতানা। এরপর বিকালে পাড়েরহাট ইউনিয়নের উমিদপুর গ্রামে তৃণমূল নারীদের সাথে এক উঠান বৈঠকে তাসমিমা হোসেন প্রধান অতিথির বক্তব্য দেন। এখানে ভান্ডারিয়া উপজেলা চেয়ারম্যান আতিকুল ইসলাম তালুকদার উজ্জল, ইন্দুরকানি উপজেলা জেপি’র যুগ্ম সম্পাদক হারুন অর রশীদ পান্না, মহিলা জাতীয় পার্টি (জেপি)’র সভানেত্রী শারমীন হোসেন, সাধারণ সম্পাদক সুলতানা রাজিয়া রানী, সাবিনা ইয়াসমিন নিনা, কৃষ্ণা দাস প্রমুখ বক্তব্য রাখেন। ইত্তেফাক সম্পাদক তাসমিমা হোসেনকে ইন্দুরকানি প্রেসক্লাবে সাংবাদিকরা ফুলের তোড়া দিয়ে শুভেচ্ছা জানান। এ সময় প্রেসক্লাব সভাপতি আজাদ হোসেন বাচ্চু, সাবেক সভাপতি ফারুক হোসেন, সহ সভাপতি সমীরণ হালদার, যুগ্ম সম্পাদক আলামীন হোসেন, দপ্তর সম্পাদক সাকিল খান, সদস্য মনিরুজ্জামান, মো. শহীদুল ইসলাম প্রমুখ তাঁকে স্বাগত জানান। ইন্দুরকানি সফরকালে ভান্ডারিয়া উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আসমা আক্তার, পিরোজপুর জেলা পরিষদের সদস্যা রোকেয়া বেগম, দুঃস্থ কল্যাণ সংস্থার উপদেষ্টা এম এ রাব্বানী ফিরোজ, ব্যবস্থাপক কাজী আতাহার আলী, ইন্দুরকানি জেপি’র সহ সভাপতি মোকররম হোসেন কবির, কাউসার আহমেদ দুলাল, মিজানুর রহমান প্রমুখ তাসমিমা হোসেনের সাথে ছিলেন।
