প্রধান সূচি

মোংলা বন্দরের ট্রাফিক বিভাগের বার্দি শাখার হারুনের খুঁটির জোর কোথায়…

মোংলা বন্দরের ট্রাফিক বিভাগের বার্দি শাখায় কর্মরত সিনিয়র আউটডোর এ্যাসিস্ট্যান্ট হারুনুর রশীদের ক্ষমতার দাপটে অসহায় ষ্টিভিডরিং ও শিপিং ব্যবসায়ীরা।
মোংলা বন্দরের ট্রাফিক বিভাগের বার্দি শাখায় হারুনুর রশীদ সিনিয়র আউটডোর এ্যাসিস্ট্যান্ট হিসেবে কর্মরত রয়েছে। উক্ত কর্মকর্তার দায়িত্ত বিভিন্ন নৌযানের পোর্ট ডিউজ, বিভিন্ন ইক্যুপমেন্ট এর রিভার ডিউজ ও টার্মিনাল চার্জ আদায় করা। পাশাপাশি বিভিন্ন প্রতিষ্ঠানের উক্ত ডকুমেন্টসগুলো ঠিক আছে কিনা তা পরীক্ষা করা। এই কাজগুলো করার সুযোগে হারুন দুর্নীতির মহোৎসবে মেতে উঠেছেন। তার কাছে উক্ত কাজ করাতে গেলে মোংলা বন্দরের নির্ধারিত মাশুলের বাইরে তার চাহিদা মোতাবেক উৎকোচ না দিলে সে সেবা প্রার্থীদের প্রতিষ্ঠানগুলোকে নানাভাবে হয়রানি করে থাকেন এবং তার চাহিদা মাফিক অতিরিক্ত ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকা আদায় করেন। কোন প্রতিষ্ঠান তার এই অনৈতিক চাহিদা পূরণ না করলে তাদেরকে নানাভাবে হয়রানী করে থাকেন এবং সময়ক্ষেপন করেন। যার ফলে বন্দরের পণ্য খালাশ কাজে ব্যবহৃত ইক্যুপমেন্টগুলো ঠিক সময়ে জাহাজে পৌঁছাতে না পারার কারণে পণ্য খালাস কাজ দারুনভাবে ব্যাহত হয়। এতে ক্ষতিগ্রস্থ হচ্ছে পণ্য আমদারিকারকসহ সংশ্লিষ্ট বন্দর ব্যবহারকারিরা।
জানা গেছে, হারুন পূর্বে মোংলা বন্দরের ডক শ্রমিক পরিচালনা বোর্ড থাকাকালীন ১৯৯২ সাল হতে মোংলা ডক শ্রমিক পরিচালনা বোর্ড এর মাইকম্যান হিসেবে কর্মরত ছিল। পরবর্তীতে মোংলা বন্দরের ডক শ্রমিক পরিচালনা বোর্ড বিলুপ্ত হলে, নৌপরিবহন মন্ত্রণালয়ের আদেশে ডক শ্রমিক পরিচালনা বোর্ড এর কর্মরত কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা মোংলা বন্দরের বিভিন্ন শাখায় কাজ করার সুযোগ পায়। সেই ধারাবাহিকতায় হারুন বর্তমানে মোংলা বন্দরের ট্রাফিক বিভাগের বার্দিং শাখায় কাজ করছে। সাধারনত মোংলা বন্দরে যেসব প্রতিষ্ঠানের শিপিং এজেন্ট, সিএন্টএফ এজেন্ট এবং ষ্টিভিডরিং লাইসেন্স রয়েছে শুধুমাত্র সেইসব প্রতিষ্ঠানই তাদের নিজস্ব বিভিন্ন ইক্যুপমেন্ট মোংলা বন্দর জেটি ব্যবহার করে নিয়মমোতাবেক নৌযানে লোড আনলোড করতে পারে । কিন্তু উক্ত হারুন মোংলা বন্দরের নিয়মনীতির তোয়াক্ষা না করে কয়েকদিন আগে রাফিয়া ট্রেডার্স (যাদের লাইসেন্স নাই, শুধুমাত্র শীপ চ্যান্ডলার লাইসেন্স আছে) নামক একটি প্রতিষ্ঠানের কাছ থেকে বিপুল পরিমানে উৎকোচ নেয় এবং রাফিয়া ট্রেডার্সকে ১টি গ্রাবস পোর্ট জেটিতে অবস্থানরত একটি জাহাজ হতে উঠিয়ে পোর্ট জেটির বাইরে বের করার সুযোগ দেয়। যা মোংলা বন্দরের ট্রাফিক বিভাগের নিয়মনীতি বিরোধী। এছাড়া বিভিন্ন সময়ে যাদের মোংলা বন্দর জেটিতে প্রবেশ করার অনুমতি নেই (মো. বেল্লাল, আব্দল হক) তাদেরকে পোর্ট জেটিতে অবৈধভাবে প্রবেশের সুযোগ করে দেয় হারুন। অবৈধ প্রবেশকারীরা পোর্ট জেটির ভিতরে চুরি করার মত অভিযোগের সাথে জড়িত থাকে। হারুনের এসব অনৈতিক কাজের প্রতিবাদ করলে সংশ্লিষ্ট প্রতিষ্ঠানের প্রতিনিধিদের মোংলা বন্দরের কাজ করতে দেওয়া হবে না বলে তিনি নানা ভয়ভীতি দেখান। যে কারণে জাহাজের পণ্য খালাস কাজ চালু রাখার স্বার্থে ষ্টিভিডরিং প্রতিষ্ঠানগুলো হারুনের অনৈতিক দাবী মেনে নিতে বাধ্য হয়। এছাড়া হারুনের বিরুদ্ধে সময়মত অফিসে উপস্থিত না থাকার অভিযোগ রয়েছে। অফিস চলাকালীন সময়ে তিনি তার বাসায় অবস্থান করেন এবং সেখানে বসে অফিসের নানা কাজ করেন।
এ প্রসংগে মোংলা বন্দরে তালিকাভুক্ত ষ্ঠিভিডরিং প্রতিষ্ঠান মনি ট্রেডার্স (প্রা:) লিমিটেডের মোংলা অফিস ম্যানেজার মো. শহীদুল ইসলাম বলেন, আমারা নানাবিধ কাজ করাতে হারুনের কাছে গেলে ডকুমেন্ট প্রতি ৮শ’ থেকে ১ হাজার টাকা উৎকোচ নেয়। টাকা না দিলে নানাভাবে ঘুরাতে থাকে। যে কারণে প্রতিষ্ঠানের অনুকুলে আগত জাহাজের পণ্য খালাশ কাজ ব্যাহত হয়। তার অনৈতিক চাহিদার অর্থ দেওয়ার ফলে অফিসের আমাদের হিসাব দিতে অসুবিধা হয়। তার আচরণে বন্দর ব্যবহারকারীরা ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
মোংলা বন্দরের বিভিন্ন ষ্ঠিভিডরিং প্রতিষ্ঠানে অস্থায়ীভাবে কর্মরত সুপারভাইজার মো. সেলিম শিকদার জানান, আমরা বিভিন্ন সময়ে পোর্ট জেটিতে কাজ করতে গেলে বার্দি শাখার হারুন আমাদের নানাভাবে হয়রানি করেন এবং ডকুমেন্টস প্রতি অতিরিক্ত টাকা আদায় করেন। তার চাহিদা মোতাবেক টাকা না দিলে, আমাদের কাজ সময়মত করে দেয় না। যে কারণে প্রতিষ্ঠানের কাজে নানাবিধ ক্ষতি হচ্ছে। এতে মোংলা বন্দরের সুনাম ক্ষুন্ন হচ্ছে। এ বিষয়ে মোংলা বন্দর কর্তৃপক্ষের সহকারী ট্রাফিক ম্যানেজার মো. কুদরত আলী’র মোবাইল নম্বরে কল করা হলে তিনি জানান, হারুনসহ এই বিভাগের কারো নামে অভিযোগ পাওয়া গেলে তাদের বিরুদ্ধে যথাযথ ব্যবস্থা নেওয়া হবে।






উত্তর দিন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.