প্রধান সূচি

রাতে উদ্ধার দুইমন হরিণের মাংস, সকালে হয়ে গেলো ৭ কেজি !

সুন্দরবন থেকে রাতে উদ্ধার করা হয়েছে দুইমন হরিণের মাংস। কিন্তু সকালে হয়ে গেলো মাত্র সাত কেজি। এমনকি হরিণের মাংস উদ্ধারের কোন ছবিও তুলে রাখতে পারেনি সুন্দরবন বিভাগ?  হরিণের মাংস উদ্ধার নিয়ে শরণখোলার বনরক্ষীদের এমন লুকোচুরিতে এলাকাবাসীর মধ্যে ব্যাপক ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।

এলাকাবাসী জানান, মঙ্গলবার রাত ৮টার দিকে সুন্দরবনের শরণখোলা রেঞ্জের আওতাধীন ভোলা টহল ফাঁড়ির রায়বাঘিনী খালে অভিযান চালায় বনরক্ষীরা। এসময় একটি ডিঙ্গি নৌকায় রাখা বস্তা ভর্তি প্রায় দুইমন হরিণের মাংস ও এক বোতল রিপকড কিটনাশকসহ দুইমন চিংড়ি মাছ জব্দ করেন তারা। এসময় দুই রাউন্ড ফাঁকা গুলিও ছোড়া হয়। তবে কোন শিকারিকে আটক করতে পারেনি বনরক্ষীরা। কিন্তু সকালে জব্দ তালিকায় মাত্র ৭ কেজি হরিণের মাংস ও ২০ কেজি চিংড়ি মাছ দেখানো হয়।

অভিযানকালে বনরক্ষীদের সাথে থাকা কমিউনিটি প্রেট্রোলিং গ্রুপ (সিপিজি) এর কয়েকজন সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে জানান, হরিণ শিকারের গোপন সংবাদ পেয়ে তারা বনবিভাগের ভোলা টহলফাঁড়ির বনরক্ষীদের জানান। এরপর রাতে ওই টহলফাঁড়ির বনরক্ষীদের সাথে নিয়ে তারা অভিযানে যান। অভিযানকালে বনরক্ষীদের উপস্থিতি টের পেয়ে শিকারিরা পালিয়ে যায়। এসময় শিকারিদের ব্যবহৃত ডিঙ্গি নৌকা তল্লাশি করে প্রায় দুইমন হরিণের মাংস ও বিষ দিয়ে ধরা দুইমন চিংড়ি মাছসহ একবোতল রিপকড কিটনাশ উদ্ধার করা হয়। উদ্ধার করা অধিকাংশ মাংস ও চিংড়ি ওই রাতেই ঘটনাস্থলের বনে মাটিচাপা দেয়া হয়েছে। এছাড়া ৫/৭ কেজি মাংস ও ১৫/২০ কেজি চিংড়ি শরণখোলা ষ্টেশনে নিয়ে মাটিচাঁপা দেয় বনরক্ষীরা। তবে এসব বিষয়ে তাদের মুখ খুলতে নিষেধ করেছে বন কর্মকর্তারা।

শরণখোলা সুন্দরবন সুরক্ষা পরিষদের সভাপতি নজরুল ইসলাম আকন বলেন, বনরক্ষীদের হরিণের মাংস উদ্ধার নিয়ে লুকোচুরি কর্মক্ষেত্রে অসচ্ছতার সামিল। বনবিভাগের এসব বিষয়ে আরো স্বচ্ছতার সাথে দায়িত্ব পালনের দাবী জানান তিনি।

শরণখোলা ষ্টেশন কর্মকর্তা মো. আসাদুজ্জামান আসাদ দুইমন হরিণের মাংস উদ্ধারের বিষয় অস্বীকার করে বলেন, রাতে ৫ থেকে ৭ কেজি হরিণের মাংস ও ২০ কেজি চিংড়ি মাছসহ একটি ডিঙ্গি নৌকা জব্দ করে মামলা দেওয়া হয়েছে। বিগত সময় হরিণের মাংস উদ্ধারের ছবি তোলা হলেও এ ঘটনার কোন ছবিও তুলতে পারেনি বলে তিনি জানান।

শরণখোলা রেঞ্জ কর্মকর্তা (এসিএফ) মো. শহিদুল ইসলাম বলেন, কে কি বললো সেটা বিষয় নয়। উদ্ধার করা সাত কেজি হরিণের মাংস ও ২০ কেজি চিংড়ি রেঞ্জ অফিস সংলগ্ন বনে কেরোসিন দিয়ে মাটিচাঁপা দেয়া হয়েছে।






উত্তর দিন

This site uses Akismet to reduce spam. Learn how your comment data is processed.