প্রধান সূচি

মামলা তুলে নেয়ার হুমকি

পিরোজপুরে গ্রেপ্তার হচ্ছেনা ধর্ষন মামলার আসামী

পিরোজপুরে জোরপূর্বক অপহরণ করে নিয়ে ধর্ষনের পর এক মেয়েকে উদ্ধার করা হলেও গ্রেপ্তার হচ্ছে না আসামী। ধর্ষিতার পরিবারের অভিযোগ বিভিন্ন মোবাইল নম্বর দিয়ে ওই ধর্ষক উল্টো প্রাণ নাশের হুমকি দিচ্ছে মেয়েটির স্বজনদেরকে। জেলার ইন্দুরকাণী উপজেলার ৯নং পত্তাশী ইউনিয়নের মোহাম্মদ মনসুর আলী খানের ছেলে মোহাম্মদ রায়হান খানের বিরুদ্ধে এ অভিযোগ পাওয়া গেছে। মেয়েটিকে উদ্ধার করার পর সে চলমান এস এস সি পরীক্ষায় অংশগ্রহণ করতে পারলেও তার পরিবার এবং স্বজনরা রয়েছে হুমকিতে।

মামলার এজাহার পত্র থেকে জানা গেছে, গত ২৯ ডিসেম্বর সকালের দিকে ০১৭৪৮৭১১৩৭৯ নম্বর দিয়ে তার মায়ের মোবাইলে একটি ফোন আসে। ফোনের অপর প্রান্ত থেকে পুরুষ কন্ঠের এক ব্যক্তি বলেন, আমি শংকরপাশা জি হায়দার স্কুলের একজন শিক্ষক বলছি। আপনার মেয়েকে জরুরি ক্লাসের জন্য এখনই স্কুলে পাঠিয়ে দেন। মেয়ে এবার এস এস সি পরীক্ষার্থী হওয়ায় তার মা তাকে স্কুলে পাঠিয়ে দেন। পথি মধ্যে ওৎ পেতে থাকা রায়হান খান একটি রুমালে চেতনা নাশক ওষুধ মিশিয়ে মেয়েটির মুখে চেপে ধরে। জ্ঞান হারালে কালো মাইক্রোবাসে করে ঢাকায় নিয়ে একটি রুমে বন্দি করে রাখে। এর পর দিনের পর দিন জোরপূর্বক ধর্ষন করা হয়।

এ দিকে চার দিক খোঁজা খুঁজি করে মেয়েকে না পেয়ে ৩০ ডিসেম্বর পিরোজপুর সদর থানায় একটি সাধারণ ডায়রী করেন তার মা। নিখোঁজের তিন দিন পর ০১৬৩৫৭৩৮৯৩৮ নম্বর দিয়ে কান্না ও ভয় জড়িত কন্ঠে মেয়েটি তার পরিবারকে জানায় সে কোথাও বন্দি আছে এবং তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে রায়হান শারীরিক নির্যাতন করছে। সে আরও জানায় রায়হান ভুল করে মোবাইল ফেলে যাওয়ায় সে জানাতে পেরেছে। এর পর কথা বলা অবস্থাই মেয়েটির মোবাইল বন্ধ হয়ে যায়।

এ সব কথা জানিয়ে গত ৬ জানুয়ারি পিরোজপুর সদর থানায় মামলা করতে গেলে পুলিশ মামলা নেয় নি। বাধ্য হয়ে মেয়েটির বাবা আব্দুর রশিদ আকন পিরোজপুর শিশু আদালতে গত ২ জানুয়ারী নারী ও শিশু নির্যাতন দমন আইনে ৭/৯(১)৩০ ধারায় রায়হানসহ তার বাবা মোহাম্মদ মনসুর আলী ও মোসাম্মত রেবা বেগমের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করেন। আদালত মামলাটি ডিবিকে তদন্ত ও মেয়েটিকে উদ্ধারের নির্দেশ দেন।

এর পর ডিবি পুলিশের সহয়তায় মেয়েটিকে উদ্ধার করে পিরোজপুর সদর হাসপাতালে ভর্তী করা হয়। ডাক্তাররা পরীক্ষা করে ধর্ষনের আলামত পান। এ বিষয়ে আদালতে মেয়েটির জবানবন্দী রেকর্ড করা হয়। এর পর আদালত মায়ের আবেদনের প্রেক্ষিতে মেয়েটিকে তার জিম্মায় দেয়। আদালত আরও নির্দেশ দেয় যে অভিযোগের বিষয়টি গুরুতর প্রকৃতির বিধায় নিয়মিমিত মামলা দায়ের করে গোয়েন্দা শাখা পিরোজপুরের মাধ্যমে তদন্ত করা হোক।

এ ব্যাপারে ডিবি পুলিশের তদন্তকারি কর্মকর্তা মোহাম্মদ শওকত হোসেন মুঠো ফোনে বলেন, মেয়েটিকে উদ্ধার করা হয়েছে। আসামী গ্রেপ্তারের ব্যাপারে চেষ্টা অব্যাহত আছে।

এদিকে মেয়েটির দুলাভাই ছাব্বির হোসেন বলেন, রায়হান ধ্রুর্ত প্রকৃতির একটি ছেলে। সে নারায়নগঞ্জের কুড়েরপাড় হাজি খাবিরের পাঁচ তলা বাড়ির ভিতরে একটি মসজিদে ইমামতি করে। এর আগেও সে না না ভাবে আমার শালিকাকে উত্যক্ত করেছে।

মেয়েটির মা বলেন, রায়হান গ্রেপ্তার না হওয়া পর্যন্ত সস্তি পাচ্ছি না। আমার বাচ্চা মেয়ে আর আমরা পরিবারের লোকজন এখনও তার হুমকিতে রয়েছি।

Please follow and like us:





উত্তর দিন

Wordpress Social Share Plugin powered by Ultimatelysocial