ঝুঁকিপূর্ণ ভবনে চলছে কাউখালী ডাকঘরের কার্যক্রম
রবিউল হাসান রবিন, কাউখালী প্রতিনিধি :
ভেজা স্যাঁতসেঁতে ছাদ। পলেস্তরা খসে ছাদের রড বেরিয়ে গেছে। দেয়ালেও বড় বড় ফাটল। এই চিত্র পিরোজপুরের কাউখালী উপজেলা ডাকঘরের। এর মধ্যেই ঝুঁকি নিয়ে কাজ করছেন কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
মঙ্গলবার সরেজমিনে দেখা যায়, ডাকঘরের পলেস্তারা খসে ছাদের কয়েকটি স্থানে ঢালাইয়ের রড বের হয়ে গেছে। ছাদের বিমে ফাটল ধরেছে। সিলিং ফ্যানের হুকগুলোয় মরিচা ধরেছে। গত বছর হুক খুলে একটি সিলিং ফ্যান খুলে নিচে পড়ে যায়। তবে ওই দুর্ঘটনায় কেউ আহত হননি। এরপর সব ফ্যান খুলে রাখা হয়। কার্যালয়টির দেয়ালেও বড় বড় ফাটল ধরেছে। ভবনের মেঝের ঢালাই উঠে গিয়ে তা দেবে গেছে। বর্ষার সময় কার্যালয়ের কাগজপত্র সব সময় পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়। বৈদেশিক ও ই-মোবাইলে টাকা লেনদেন এবং প্রশিক্ষন দেয়ার জন্য ডাক বিভাগ কম্পিউটার দিয়েছে এ কার্যালয়ে। সে গুলো পলিথিন দিয়ে ঢেকে রাখা হয়েছে। দরজা-জানালা গুলো ভাঙ্গা। বৈদ্যুতিক লাইনে সমস্যার কারনে প্রায় দুর্ঘটনার শিকার হয়। তিন কক্ষের এ জরাজীর্ণ ডাকঘরটিতে কার্যক্রম চালানো ঝুঁকিপূর্ণ হয়ে পড়েছে। কার্যালয়ের পাশে পোস্টমাস্টারের আবাসিক ভবন। ওই ভবনটিরও একই অবস্থা।
গতকাল মঙ্গলবার ডাকঘরে সঞ্চয় হিসাবের টাকা নিতে আসেন উত্তর বাজারের ব্যবসায়ী অলোক কর্মকার। তিনি বলেন, প্রতি মাসে একবার পোস্ট অফিসে আসতে হয়। ভবনের ভেতরে বেশিক্ষণ থাকলে বুকের ভেতর ধড়ফড় করে। খানিক পরপর ছাদ থেকে বালু ঝুরঝুর করে মাথায় পড়ে।
শিয়ালকাঠী গ্রামের শাহ আলম বলেন, ‘বেশি লাভের আশায় ব্যাংকে টাকা না রেখে পোস্ট অফিসে রেখেছি। অনেক দিন ধরে পোস্ট অফিসের এ অবস্থা। দেখে মনে হয় পোস্ট অফিসের কর্মকর্তারা নাকে তেল দিয়ে ঘুমাচ্ছেন। দুর্ঘটনায় গ্রাহক মারা গেলে তাঁদেরই বা কী!’
কর্মরত পোস্টমাস্টার মুজিবুর রহমান বলেন, তিনি দেড় বছর ধরে এ কার্যালয়ে দায়িত্ব পালন করছেন। চিঠিপত্রের কাজের চেয়ে এখানে টাকা লেনদেনের ভিড় বেশি। এ কার্যালয়টি প্রায় বিশ বছর আগে নির্মাণ করা হয়। চাকরি করেন বলে সবকিছু মেনে নিতে হচ্ছে। কোনো সুস্থ মানুষ এসব ভবনে থাকবেন না। তিনি একাধিকবার ভবনের এ দুর্দশা এবং। অবিলম্বে অফিসটি অন্যত্র ন্থানান্তরের দাবী ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের জানিয়েছেন। কিন্তু কোনো ফল মেলেনি।
এ দিকে পরিবেশ ও বন মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু এমপি কাউখালী উপজেলার প্রধান ডাকঘর জরাজীর্ণ ভবনটি পুনরায় নতুন ডিজাইনে নিমার্ণেও জন্য বাংলাদেশ ডাক-বিভাগের মহাপরিচালকের নিকট গত ২০১৬ সালের ১৯ ডিসেম্বও আধা-সরকারীপত্র (ডিও লেটার) প্রদান করেন বলে একটি সুত্রে জানা যায়।
