স্বরূপকাঠীতে সমবায় সমিতির পরিচালক মিজানের সুদের ফাঁদে সর্বস্বান্ত সাধারণ মানুষ : এলাকাবাসীর মানববন্ধন
পিরোজপুরের নেছারাবাদে (স্বরূপকাঠী) আলকিরহাট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতির সভাপতি শিক্ষক মিজানুর রহমান ও সম্পাদক শিক্ষক মো. আলআমীনের বিরুদ্ধে আইন বহির্ভূত আর্থিক কর্মকান্ড ও চড়া সুদের ব্যবসার অভিযোগে মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভা অনুষ্ঠিত হয়েছে।
গতকাল রবিবার সকালে উপজেলার আলকিরহাট বাজারে ভুক্তভোগী ব্যবসায়ী, দিনমজুর ও এলাকাবাসীরা এ কর্মসূচি পালন করেন।
মানববন্ধনে বক্তারা অভিযোগ করেন, ৭০নং পাটিকেলবাড়ী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মিজানুর রহমান ও ১১৯নং সারেংকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক মো. আলআমীন শিক্ষকতার পাশাপাশি ‘আলকিরহাট ক্ষুদ্র ব্যবসায়ী সমবায় সমিতি’ (রেজি নং: ৫৯ পিডি) নাম ব্যবহার করে অবৈধভাবে চড়া সুদে অর্থ ঋণ প্রদানসহ নানা অনিয়ম চালিয়ে যাচ্ছেন।
তাদের কাছ থেকে ঋণ নিয়ে অনেক মানুষ বসতবাড়ি হারিয়েছেন, আবার কেউ কেউ চেক মামলার ভয়ে এলাকা ছেড়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। এসব ঘটনায় অনেক পরিবার মানবেতর জীবনযাপন করছেন বলে অভিযোগ উঠে।
ভুক্তভোগী শিরিন বেগম নামে এক বৃদ্ধা অভিযোগ করে বলেন, ‘আমার ছেলে ভাড়ায় অটোরিকশা চালাত। মিজান স্যার আমাকে ৪০ হাজার টাকা ঋণ দেন। আমি সুদসহ ৫০ হাজার টাকা ফেরত দিয়েছি, তবুও তিনি আমার চেক ফেরত দেননি উল্টো আরও টাকা দাবি করছেন। অন্যাথায় আমার এবং ছেলের নামে চেকের মামলা করবেন বলে হুমকি দিচ্ছেন।’
আরেক ভুক্তভোগী রিকশাচালক মো. আলাউদ্দীন বলেন, ‘আমি ঘর তোলার জন্য মিজান স্যারের কাছ থেকে ২ লাখ ৭০ হাজার টাকা ঋণ নিয়েছিলাম। বিনিময়ে তিনি আমার বসতবাড়ির জমি নিজের নামে চুক্তিতে লিখে নেন। এখন সব টাকা পরিশোধ করেও তিনি চেক ও কাগজ ফেরত দিচ্ছেন না, বরং চেক মামলার ভয় দেখাচ্ছেন।’
বক্তারা বলেন, দুই শিক্ষক তাদের প্রভাব খাটিয়ে সাধারণ মানুষের কাছ থেকে অর্থ হাতিয়ে নিচ্ছেন। এতে এলাকার বহু দরিদ্র মানুষ নি:স্ব হয়ে পড়েছেন। তারা সমবায় অধিদপ্তরসহ সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের জরুরি তদন্ত ও অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানান।
মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সভায় স্থানীয় ব্যবসায়ী, সমাজসেবক ও নানা শ্রেণি-পেশার মানুষ অংশ নেন। ভুক্তভোগীরা সমিতির রেজিস্ট্রেশন বাতিল এবং তাদের জমি ও অর্থ ফেরতের দাবি জানান।
এ বিষয়ে অভিযুক্ত মিজানুর রহমান বলেন, আমি মানুষের টাকা নিয়ে ব্যবসা করি। লাভসহ টাকা দিতে হয়। যারা টাকা ফেরৎ দিচ্ছেনা। তাদের নামে মামলা করছি।
নেছারাবাদ উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. হাসান রকি জানান, মিজানুর রহমানের বিরুদ্ধে অভিযোগ পেয়েছি। তার কর্মকান্ডের বিষয়ে তদন্ত চলছে।
