চাঁদাবাজীর মামলায় স্বরূপকাঠীতে উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়কসহ ৩ জন কারাগারে
পিরোজপুরের নেছারাবাদ (স্বরূপকাঠী) উপজেলায় স্কুল শিক্ষকের দায়ের করা একটি চাঁদাবাজি মামলায় নেছারাবাদ উপজেলা ছাত্রদলের যুগ্ম আহবায়ক মো. ইমরান খন্দকারসহ ৩ জনকে কারাগারে পাঠিয়েছে পিরোজপুর আদালত।
রবিবার দুপুরে আসামীরা পিরোজপুর জামিনের জন্য আবেদন করে আদালতে হাজির হলে আদালতের বিচারক পিরোজপুর জেলা ও দায়রা জজ তাদের জামিন না’মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেন। কারাগারে যাওয়া অন্যরা হলেন- মো. ইকরাম খন্দকার এবং আওয়ামী লীগ কর্মী শেখ রাহাত হেসেন (রাসেল)।
গত ১৮ জুন কুহুদাসকাঠি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারি শিক্ষক মো. গোলাম কিবরিয়া বাদী হয়ে তাদের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজীর মামলাটি করেন।
মামলার এজাহার সূত্রে জানা গেছে, আসামীরা এলাকার চিহ্নিত চাঁদাবাজ। আসামীদের মধ্যে শেখ রাহাত হোসেন রাসেল বিগত আওয়ামী লীগ আমলে উপজেলার সমুদয়কাঠিতে সন্ত্রাসের রাম রাজত্ব করতো। গত ২০২৪ সালের ৫ আগষ্টের সরকার পরিবর্তনের পর উভয় আসামী এলাকায় মাদক ব্যবসাসহ জমিদখল ও চাঁদাবাজি করতো। মামলার বাদী স্কুল শিক্ষক গোলাম কিবরিয়ার সেহাংগল ট্যাম্পু ষ্ট্যান্ডে দু’টি দোকান রয়েছে। ছাত্রদল নেতা মো. ইমরান খন্দকারের সাথে মিলে সেখ রাহাত হোসেন ও ইকরাম খন্দকার ভুক্তভোগী গোলাম কিবরিয়াকে ভয় দেখিয়ে মোটা অংকের চাঁদা নিতো। গত ১৮ এপ্রিল রাতে আসামীরা ওই স্কুল শিক্ষক গোলাম কিবরিয়ার পথরোধ করে ৫ লাখ টাকার চাঁদা দাবী করে। তাদের দাবীকৃত চাঁদা দিতে অস্বীকৃতি জানালে তারা ওই শিক্ষকের ভোগদখলীয় জমিতে রোপিত গাছপালা কেটে জমি দখলের জন্য বেড়া দেয়। বিষয়টি থানা পুলিশকে অবহিত করলে জমি দখলে ব্যর্থ হয়। পরে ওই শিক্ষক গত শুক্রবার জুমার নামাজে যাবার পথে তাকে আটকে পকেট থেকে একটি এতিমখানার জন্য রাখা ৩০ হাজার টাকা নিয়ে যায় ইমরান খন্দকার ও তার সহযোগীরা। এসময় তাকে মারধর করে রাস্তা ফেলে চলে যায়।
মামলার বাদী স্কুল শিক্ষক মো. গোলাম কিবরিয়া বলেন, ইমরান খন্দকার, ইকরাম খন্দকার এবং তাদের পিতা মিজান খন্দকার। তারা এলাকার চিহ্নিত সন্ত্রাস। তাদের সাথে মিলেছে আওয়ামী লীগের কর্মী শেখ রাহাত হোসেন। তারা আমাকে হত্যার ভয় দেখিয়ে চাঁদা নিতো। তাদের বিরুদ্ধে নেছারাবাদ থানায় চাদাবাজি মামলা করেছি। সেই মামলায় আসামীরা হাইকোর্ট থেকে জামিন নিয়েছিল। রবিবার পিরোজপুর নিম্ন আদালতে জামিনের জন্য আবেদন করে হাজির হলে বিজ্ঞ আদালত জামিন না’মঞ্জুর করে তাদের তিনজনকে কারাগরে পাঠিয়েছেন।
পিরোজপুর জেলা ছাত্রদলের সাধারণ সম্পাদক মো. মাহমুদ হাসান শাহীন বলেন, বিষয়টি যতদূর জানি একটা পারিবারিক বিরোধকে কেন্দ্র করে মামলা। এক্ষেত্রে ব্যক্তির দায় সংগঠন নিবে না।
পিরোজপুর জেলা জজ আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবি (পিপি) আবুল কালাম আকন বলেন, একটি ব্যক্তিগত বিরোধ নিয়ে এই মামলাটি ছিল। আসামীরা জামিনের জন্য আদালতে হাজির হলে বিজ্ঞ আদালত মামলার ৪ জন আসামীর মধ্যে ৩ জনের জামিন না’মঞ্জুর করে কারাগারে প্রেরণ করেছেন। মিজান খন্দকার নামে একজনকে জামিন দিয়েছে আদালত।
