মোড়েলগঞ্জে শতবর্ষী মসজিদের নাম বদলের চেষ্টা ॥ এলাকায় উত্তেজনা
বাগেরহাটের মোড়েলগঞ্জে একটি শতবর্ষী জামে মসজিদের নাম বদলের চেষ্টা করছে স্থানীয় প্রভাবশালীরা। আর ঐতিহ্য ধরে রাখতে নাম বদলের বিরোধীতা করায় মসজিদ কমিটির সাধারণ সম্পাদকসহ মুসল্লিদের উপর হামলা ও মিথ্যা মামলা দিয়ে হয়রানীর অভিযোগ উঠেছে। এ ঘটনায় এলাকায় উত্তেজনা দেখা দিয়েছে।
এলাকাবাসি জানান, মোড়েলগঞ্জ উপজেলার চিংড়াখালী ইউনিয়নের ‘পশ্চিম চিংড়াখালী মুন্সিবাড়ী জামে মসজিদ’ ১৮২০ সালে স্থানীয় মুসল্লিদে নামাজ পড়ার জন্য প্রতিষ্ঠা করা হয়। সেই থেকে এই জামে মসজিদটির সকল কার্যক্রম ওই নামেই চলে আসছিল। কিছুদিন আগে একই গ্রামের কুয়েত প্রবাসি রফিকুল ইসলাম টিপু মুন্সি এই জামে মসজিদটির নাম বদল করে ‘শেখ মহব্বত উল্লাহ জামে মসজিদ’ নাম দিয়ে একটি সাইনবোর্ড মসজিদটির গায়ে টানিয়ে দেয়। মুসল্লিরা ক্ষিপ্ত হয়ে সাইনবোর্ডটি সরিয়ে ফেললে রফিকুল ইসলাম টিপু মুন্সি, সিদ্দিকুর রহমান মুন্সি, নুর মোহাম্মদ তালুকদার, আবুয়াল তালুকদার, এনাম শেখ মুসল্লিদের উপর হামলা চালায়। এতে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম হাওলাদারসহ কয়েকজন আহত হন। এঘটনার পর মো. রফিকুল ইসলাম টিপুর স্ত্রী বাদী হয়ে উল্টো মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম হাওলাদারসহ ৪ জনের নাম উল্লেখ করে একটি মামলা দায়ের করেন।
মসজিদটির মুসল্লি আলকাজ হাওলাদার (৬০) জানান, জন্মের পর থেকে এই মসজিদটির নাম ‘পশ্চিম চিংড়াখালী মুন্সিবাড়ী জামে মসজিদ’ শুনে আসছি। তখন কাঁচা ঘর ছিল এই মসজিদটির। হঠাৎ নাম পরিবর্তনের খবর শুনে আমরা মর্মাহত হয়েছি।
মসজিদ পরিচালনা কমিটির সদস্য মো. হাকিম মুন্সি (৬৫) বলেন, আমার পূর্ব পুরুষদের দান করা মাত্র ৬ শতাংশ জমির উপর ১৮২০ সালে মসজিদটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। পরে এই মসজিদের নামে আরো কিছু জমি দান করা হয়েছে। সকল কাগজপত্রে এটি ‘পশ্চিম চিংড়াখালী মুন্সিবাড়ী জামে মসজিদ’ লেখা আছে। হঠাৎ মসজিদের নাম পরিবর্তনের খবর আমরা কিছুতেই মেনে নিতে পারছি না।
এ বিষয়ে মসজিদ পরিচালনা কমিটির সাধারণ সম্পাদক মো. শামীম হাওলাদার বলেন, আগে মসজিদটির কাঁচা ঘর ছিল। এলাকাবাসির ঐকান্তিক চেষ্টায় মসজিদটি পাকা করে সেখানে টাইলস লাগানো হয়েছে। শত বছরের পুরাতন এই মসজিদটি আগের নামেই থাকুক এটাই মুসল্লিদের প্রত্যাশা। কিন্তু এলকার প্রভাবশালী কুয়েত প্রবাসি রফিকুল ইসলাম টিপু মুন্সি তার লোজন নিয়ে এটির নাম পরিবর্তন করে ‘শেখ মহব্বত উল্লাহ জামে মসজিদ’ নামকরণের চেষ্টা করছে। যার প্রতিবাদ করায় হামলা ও মিথ্যা মামলার শিকার হতে হচ্ছে।
এ বিষয়ে রফিকুল ইসলাম টিপু মুন্সির বক্তব্য নেয়ার চেষ্টা করেও তিনি কুয়েতে থাকায় তার কোন বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
