প্রধান সূচি

৩টি বসতঘর ও ২টি দোকান বিলীন

আবারো শুরু হয়েছে স্বরূপকাঠির সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গন

স্বরূপকাঠি উপজেলার জোয়ারের তীব্র স্রোত আর বর্ষায় সন্ধ্যা নদীতে ফের তীব্র ভাঙ্গন দেখা দিয়েছে। নদীর অব্যাহত তীব্র ভাঙ্গনে বিলীন হচ্ছে নদী সংলগ্ন বিভিন্ন গ্রামের বসতঘর, বাগানবাড়ি, ফসলী জমিসহ বিস্তীর্ন জনপদ। গত শুক্রবার বিকেলে সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গনে উপজেলার কৌরিখাড়া লঞ্চঘাট সংলগ্ন এলাকার মো. নুরুল হক, মো. মোস্তাহার মিয়া ও দুলাল মিয়ার বসতঘর, হুমাউন ও মিলনের দোকানঘরসহ প্রায় ২০ শতাংশ বাগানবাড়ি নদী গর্ভে হারিয়ে গেছে। দক্ষিন কৌরিখাড়া লঞ্চঘাটের জেটির পিছনের সড়কও নদীগর্ভে তলিয়ে গেছে। কাঠের তক্তার উপর দিয়ে জীবনের ঝুঁকি নিয়ে যাত্রীদের পন্টুনে উঠানামা করতে হয়। লঞ্চঘাটের সুপারভাইজার মো. সিদ্দিকুর রহমান জানান, সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গন থেকে রক্ষার্থে এ পর্যন্ত তিনবার দক্ষিন কৌরিখাড়া লঞ্চঘাটটি  স্থান্তান্তর করেও যেন শেষ রক্ষা হচ্ছে না। কয়েক মাস পুর্বে একই এলকার মো. শহীদুল ইসলাম, মো. সেলিম হোসেন ও মো. আলমগীর হোসেনের বসতঘরসহ বাগানবাড়ি নদীগর্ভে বিলীন হয়ে যায়। ভাঙ্গন সংলগ্ন এলাকায় দেখা দিয়েছে ছোট বড় অনেক ফাটল। সন্ধ্যা নদীর পশ্চিম তীরের দক্ষিন কৌরিখাড়া, পুর্ব সোহাগদল, গণমান গ্রামের নদী ভাঙ্গন ভয়াবহ রূপ ধারন করেছে। একে একে সন্ধ্যার অতল গহ্বরে বিলীন হয়ে যাচ্ছে বসত ঘর, বাগানবাড়িসহ ফসলী জমি। নদী ভাঙ্গনে সর্বস্ব হারিয়ে ছিন্ন মূলে পরিনত হয়েছে অনেক পরিবার। বছর দেড়েক আগে গণমান গ্রামের মো. মজিবুর রহমান, মো. আবুল কালাম, মো. আসলাম হোসেন, মো. কবির হোসেন, মো. মিজানুর রহমান, মো. ফজলুল হক, মো. আলমগীর হোসেন ও সোহেলের বসত ঘরসহ প্রায় ১০ একর বাগানবাড়ি সন্ধ্যার অতল গর্ভে তলিয়ে গেছে। অব্যাহত ভাঙ্গনে ইতিমধ্যে দক্ষিন কৌরিখাড়া ও গণমান গ্রামটি প্রায় দুই তৃতীয়াংশ বিলীন হয়ে গেছে। ভিটে মাটি হারিয়ে অনেক পরিবার মানবেতর জীবন যাপন করছে। ভাঙ্গন কবলিত এলাকায় অনেক পরিবার এখনও তাদের শেষ আশ্রয় স্থল বসত ভিটায় জীবনের ঝুঁকি নিয়ে বসবাস করছে।

স্বরূপকাঠি-পিরোজপুর সড়কের কামারকাঠি নামক স্থানে নদী ভাংঙ্গনের ফলে চরম ঝুঁকির মধ্যে যানবাহন চলাচল করছে। প্রায় ৩০ বছর ধরে সন্ধ্যা নদীর অব্যাহত ভাঙ্গনের ফলে ইতোমধ্যে উপজেলার, উত্তর কৌরিখাড়া, দক্ষিন কৌরিখাড়া, ছারছীনা, শান্তিহার, কুনিয়ারী জলাবাড়ী, পুর্ব সোহাগদল, গণমান, মুনিনাগ, কামারকাঠি, ব্যাসকাঠি, সেহাংগল এলাকার অনেকের বসত ভিটে, হাজার হাজার একর ফসলী জমিসহ বিস্তীর্ন জনপদ সর্বনাশা সন্ধ্যা গ্রাস করে নিয়েছে। এদিকে কৌরিখাড়া বিসিক শিল্প নগরী, কৌরিখাড়া ডাকঘরসহ বিভিন্ন প্রতিষ্ঠান সন্ধ্যা নদীর ভাঙ্গনের হুমকির সম্মুখীন। বিগত দিনে উত্তর কৌরিখাড়া ও দক্ষিন কৌড়িখাড়া ভাঙ্গন কবলিত খেয়াঘাট সংলগ্ন কিছু এলাকায় ব্লক ও জিও টেক্স ব্যাগে বালু ভর্তি করে ফেলে সাময়িক ভাঙ্গন রোধ হলেও দক্ষিণ দিকের দক্ষিণ কৌরিখাড়া, পুর্ব সোহাগদল ও গনমান গ্রামের ভাঙ্গন তীব্র আকার ধারণ করেছে।

এলাকাবাসি ও ভুক্তভোগীরা ভাঙ্গন রোধে দ্রুত প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা গ্রহনের জন্য সরকারের কাছে জোর দাবি জানিয়েছেন।

Please follow and like us:





উত্তর দিন

Wordpress Social Share Plugin powered by Ultimatelysocial