প্রধান সূচি

আগামীতে জাতীয় পার্টিকে নিয়েই নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে হবে …. এইচ এম এরশাদ

জাতীয় পার্টি (জাপা) চেয়ারম্যান ও সাবেক রাষ্ট্রপতি হুসেইন মুহাম্মদ এরশাদ বলেছেন, আগামীতে জাতীয় পার্টিকে নিয়েই গ্রহণযোগ্য নির্বাচনের মাধ্যমে ক্ষমতায় যেতে হবে। জনগন সকল অপশাসনের পরিবর্তন চায়। দেশে প্রশ্নপত্র ফাঁস, চাকুরীতে ঘুষ আর চলতে পারেনা। দেশকে বাঁচাতে, মানুষকে বাঁচাতে আগামীতে জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় আসতে হবে। আমরা রক্তপাতে বিশ্বাসী নই, শান্তিতে বিশ্বাসী। যারা বলেন আমি নূর হোসেন ও ডা. মিলনকে মেরেছি তারা মিথ্যা বলেন। যারা নূর হোসেন ও মিলনকে মেরেছে তাদের বিচার আওয়ামী লীগ ও বিএনপি আজও কেন করেনি।

এরশাদ বলেন, আমার নয় বছরের শাসন আমলে উপজেলা ও জেলা প্রবর্তন করেছি। গোটা  দেশের যোগাযোগ ব্যবস্থার উন্নয়ন করেছি। উপজেলা পর্যায় আদালত করেছি। তারপরও বিএনপি সরকার আমাকে ৬ বছর কারাগারে পাঠিয়ে নির্দয় নির্যাতন করেছে। আমি অসুস্থ ছিলাম আমাকে যথাযথ চিকিৎসা দেয়া হয়নি। আমাকে মেরে ফেলার ষড়যন্ত্র করা হয়েছিল। আজও আমি বেঁচে আছি। জাতীয় পার্টিও বেঁচে আছে। মানুষ আর  জুলুম সংঘাত চায়না, শান্তি ও উন্নয়ন চায়। তা একমাত্র দিতে পারে জাতীয় পার্টি।

তিনি আরও বলেন, জনগন জাতীয় পার্টির উন্নয়ন ও শাসন দেখেছে আওয়ামী লীগ ও বিএনপির শাসনও দেখেছে। আর আওয়ামী লীগ বিএনপি নয় জাতীয় পার্টি ক্ষমতায় আসলে  দেশের সবাই নিরাপদ। আমাদের বন্ধু কোন দল নয়, আমাদের বন্ধু দেশের জনগন। জাতীয় পার্টি ছাড়া কেউ ক্ষমতায় যেতে পারবেনা। সবাই ভেবে ছিল জাতীয় পার্টি ধংস হয়ে যাবে। ২৭ বছর ধরে জাতীয় পার্টি বেঁচে আছে, বেঁচে থাকবে। জাতীয় পার্টি কোন প্রতিহিংসা জ্বালাও-পোড়াও, হরতাল, সন্ত্রাস বিশ্বাস করেনা। আমরা শান্তিতে বিশ্বাস করি।

মঙ্গলবার বিকেলে পিরোজপুরের মঠবাড়িয়ার শহীদ মোস্তফা খেলার মাঠে স্থানীয় জাতীয় পার্টি আয়োজিত এক সমাবেশে প্রধান অতিথির বক্তব্যে সাবেক রাষ্ট্রপতি এইচ এম এরশাদ এসব কথা বলেন।

তিনি সমাবেশে অভিযোগ করে বলেন, মঠবাড়িয়ায় জাতীয় পার্টির জনসভা বানচাল করতে একটি সন্ত্রাসী মহল বাঁধা দিয়েছে। কর্মীদের মারধর করেছে। তিনি এজন্য মঠবাড়িয়া উপজেলা চেয়ারম্যান ও থানার ওসিকে অভিযুক্ত করে তাদের বিচার দাবি করেন। এসময়  এইচ এম এরশাদ পিরোজপুর-৩ (মঠবাড়িয়ার) আসনের সংসদ সদস্য জাতীয় পার্টিতে ফের যোগদানকারী ডা. রুস্তুম আলী ফরাজির হাত উচিয়ে সমাবেশে তাকে আগামী নির্বাচনে পিরোজপুর-৩ আসনে প্রার্থী ঘোষণা করেন। এসময় তিনি মঠবাড়িয়ার জনগনের উদ্দেশ্যে বলেন, ডা. ফরাজিকে আগামীতে এমপি নির্বাচিত করলে তাকে মন্ত্রীত্ব দেয়া হবে। আমি তাই চাই। জাতীয় পার্টিকে ক্ষমতায় না দেখা পর্যন্ত আমি নিজেকে বৃদ্ধ মনে করিনা। ইনশাল্লাহ আমি এগিয়ে যাবো তরুণের মতো।

মঠবাড়িয়া উপজেলা জাতীয় পার্টির আহ্বায়ক মো. নাজমুল আহসান কবীরের সভাপতিত্বে সমাবেশে জাতীয় পার্টির মহাসচিব এবিএম রুহুল আমীন হাওলাদার হুশিয়ারি উচ্চারণ করে বলেন, মঠবাড়িয়ার সমাবেশে স্থানীয় উপজেলা চেয়ারম্যানের লেলিয়ে দেয়া সন্ত্রাসী বাহিনী মানুষকে বাঁধা দিয়েছে। মারধর করেছে। আগামী ২৪ ঘন্টার মধ্যে উপজেলা চেয়ারম্যান ও থানার ওসির বিরুদ্ধে সরকার ব্যবস্থা না নিলে জাতীয় পার্টি প্রয়োজনে সংসদ বর্জন করবে। বিচার না হলে আগামীতে আওয়ামী লীগের জোটে থাকবো কিনা তা নতুন করে ভাবতে হবে।

সমাবেশে আরও বক্তব্য রাখেন, জাতীয় পার্টির কো-চেয়ারম্যান গোলাম কাদের, জাতীয় পার্টির প্রেসিডিয়াম সদস্য এবং বন ও পরিবেশ মন্ত্রী ব্যরিষ্টার আনিসুল ইসলাম মাহমুদ এমপি, শ্রম ও কর্মসংস্থান প্রতিমন্ত্রী মজিবুল হক চুন্নু, জিয়া উদ্দিন আহমেদ বাবলু এমপি, কাজী ফিরোজ রশিদ এমপি, স্থানীয় সরকার ও পল্লী উন্নয়ন প্রতিমন্ত্রী মশিউর রহমান রাঙ্গা এমপি, পিরোজপুর-৩ আসনের এমপি ডা. রুস্তুম আলী।

এর আগে জাতীয় পার্টি চেয়ারম্যান এইচ এম এরশাদ কেন্দ্রীয় নেতাদের সাথে হেলিকপ্টারযোগে দুপুর আড়াইটার দিকে মঠবাড়িয়া সরকারী কলেজ মাঠে অবতরণ করেন। পরে তিনি নেতা-কর্মীদের নিয়ে শহরের শহীদ মোস্তফা খেলার মাঠে সমাবেশ স্থলে আসেন। এসময় তাকে ফুল দিয়ে বরণ করা হয়।

Please follow and like us:


« (পূর্ববর্তি সংবাদ)



উত্তর দিন

Wordpress Social Share Plugin powered by Ultimatelysocial