মানুষ ঐক্যবদ্ধ থাকলে এলাকার উন্নয়ন দ্রুততর হয় …. আনোয়ার হোসেন মঞ্জু
জাতীয় পার্টি- জেপি’র চেয়ারম্যান ও পানি সম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেছেন, আমরা ভিন্ন ভিন্ন রাজনৈতিক দল ও মতের অনুসারী হতে পারি। কিন্তু মানুষের ভাগ্যোন্নয়নের জন্য সবাইকে ঐক্যবদ্ধ থাকতে হবে। যে এলাকায় ঝগড়া-বিবাদ, সামাজিক মতানৈক্য, পরমত সহিষ্ণুতার অভাব থাকে সেখানে উন্নয়ন ব্যহত হয়, উন্নয়ন সহযোগী এবং সরকারি বরাদ্দ আসে না।
তিনি বৃহস্পতিবার জেলার ভান্ডারিয়া ও ইন্দুরকানি উপজেলার বিভিন্ন অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথির বক্তব্যে আরও বলেন, আমরা বিগত ৩২/৩৩ বছর ধরে এলাকার মানুষকে নিজের পায়ে দাড়ানোর জন্য আহ্বান জানিয়ে এসেছি। একতাবদ্ধ হয়ে উন্নয়নের জন্য দাবী জানালে তা অর্জন দ্রুততর হয়। দক্ষিণাঞ্চলের অবহেলিত মানুষকে এক থেকে তাদের অধিকারের পক্ষে কাজ করে যেতে হবে। আমাদের দেশে শিক্ষা ব্যবস্থা এখনও কর্মমুখী করে প্রতিষ্ঠিত করা যায় নি। আমাদের শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে যা শিক্ষা দেয়া হয় তা জীবনের জন্য কাজে লাগে না। বিদেশের এ অভিজ্ঞতা ভিন্ন। তবে আগামী দু’এক বছরের মধ্যে আমাদের দেশেও এ অবস্থার পরিবর্তন ঘটবে। ডিজিটাল পদ্ধতি ব্যবহার করে ঘরে বসে আউট সোর্সিংয়ের মাধ্যমে আমাদের শিক্ষিত তরুণরা হাজার হাজার টাকা উপার্জন করতে সক্ষম হবে।
আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বলেন, বিশ্বে আজ নারী নেতৃত্বের বিকাশমান ধারার সাথে বাংলাদেশেও তার প্রতিফলন লক্ষ্য করা যাচ্ছে। সরকার প্রধান, সংসদের স্পীকার, বিরোধী দলের নেত্রীসহ বিভিন্ন গুরুত্বপূর্ণ স্থানে নারীদের অবস্থান সংহত হচ্ছে। আমাদের শান্তিপূর্ণ, নিরবচ্ছিন্ন, সফল জীবন-যাপন করার জন্য দেশে উন্নত চরিত্রের লোক দরকার। যাদের মধ্যে মানুষের প্রতি সহানুভূতি, আদর্শ ও সহযোগিতার মনোভাব থাকতে হবে। নেতৃত্বের দায়িত্ব হচ্ছে মানুষের কথা শোনা, আবার মানুষকে কথা শোনানো। আমাদের বিশ্বাস আগামীতে এ অঞ্চল থেকে এমন মানুষ তৈরী হবে যারা দেশের নেতৃত্ব দেবেন, দেশের প্রধানমন্ত্রী হবেন।
পানি সম্পদ মন্ত্রী আনোয়ার হোসেন মঞ্জু বৃহস্পতিবার রাতে ইন্দুরকানি উপজেলার পাড়েরহাটের কালিবাড়ী বাজারে এক জনাকীর্ণ উঠান বৈঠকে বলেন, গ্রাম পর্যায়ের ছোটখাটো অবকাঠামোগত উন্নয়নের দায়িত্ব মূলতঃ স্থানীয় সরকার তথা ইউনিয়ন পরিষদ ও উপজেলা পরিষদের। এসব সমস্যার কেন্দ্রীয় সরকার সমাধান করে না। বড় বড় কাজ কেন্দ্রীয় সরকার করে এবং এই জন্য কেন্দ্র থেকে যথেষ্ট বরাদ্দ দেয়া হয়। কিন্তু এ বরাদ্দের যথাযথ সদ্ব্যবহার হয় না বলে আমাদের বাধ্য হয়ে তৃণমূলের প্রতি নজর দিতে হয়। কিন্তু ক্ষোভের সাথে বলতে হয় অনেকে রক্তচক্ষু ও পেশী শক্তি দেখিয়ে উন্নয়ন কাজ ব্যহত করে। শেখ হাসিনা মানুষের দুর্ভোগ নিয়ে রাজনীতি করে না। তিনি যেমন দীর্ঘ মেয়াদী ব্যবস্থা নেন, তেমনি স্বল্প মেয়াদী ব্যবস্থাও গ্রহণ করেন। মনে রাখতে হবে কেউই আইনের ঊর্ধ্বে নন। আমরা উপজেলা ও ইউনিয়ন পর্যায়ের উন্নয়ন কাজের বিষয়ে হস্তক্ষেপ করি না। এমনকি আমার নিজের বরাদ্দ স্থানীয় পর্যায়ের জনপ্রতিনিধিদের দিয়ে সম্পন্ন করে থাকি।
মন্ত্রী বলেন, সরকার ২০১৮ সালের মধ্যে ঘরে ঘরে বিদ্যুৎ দেয়ার ঘোষণা দিয়েছে। আগামী জুনের মধ্যে এ এলাকার সবাই বিদ্যুৎ পাবেন। ইতিমধ্যে ইন্দুরকানিতে কঁচানদীতে ভেড়ীবাধ নির্মাণ শুরু হয়েছে, আগামীতে আরও ভেড়ীবাধ নির্মাণ করা হবে। পাড়েরহাটের টগড়া থেকে ইন্দুরকানি হয়ে বালিপাড়া-সন্নাসী সড়ক উন্নয়নের কাজও শুরু হয়েছে। তিনি বলেন, উন্নয়নের জন্য সকলকে একমত হতে হবে, সংগ্রাম করে ঠিকে থাকতে হবে।
ইন্দুরকানি প্রতিনিধি জানান :
জাতীয় পার্টি-জেপি’র উদ্যোগে রাতে এ উঠান বৈঠকে জাতীয় পার্টি-জেপি’র চেয়ারম্যান আনোয়ার হোসেন মঞ্জু স্থানীয় গ্রামবাসীদের সাথে সরাসরি মতবিনিময় করেন এবং প্রশ্নোত্তর পর্বে মিলিত হন। ইন্দুরকানি উপজেলা জেপি’র সিনিয়র সহ সভাপতি ও ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান গোলাম সরোয়ার বাবুলের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে গ্রামবাসীদের মধ্যে বক্তব্য রাখেন জয়নাল আবেদীন খান, মোসলেম আলী হাওলাদার, ইউপি সদস্য আয়শা আক্তার পপি, ইউপি সদস্য নূরুল ইসলাম, ইউপি সদস্য এনায়েত হোসেন সিকদার, আব্দুর রাজ্জাক খলিফা, আলতাফ হোসেন, আব্দুর রব হাওলাদার, নিধির চন্দ্র বৈরাগী, নাসিমা আক্তার সনিয়া, রবীন্দ্রনাথ দাস, রফিকুল ইসলাম, ইদ্রিস আলী হাওলাদার, আকব্বর আলী, কালু সেখ ও হাবিবুর রহমান। উঠান বৈঠক সঞ্চালনা করেন উপজেলা জেপি’র যুগ্ম সাধারণ সম্পাদক হারুন অর রশীদ পান্না।
এ সময় মঞ্চে উপস্থিত ছিলেন ইন্দুরকানি উপজেলা নির্বাহী অফিসার রাজীব আহমেদ, ভান্ডারিয়া উপজেলা জেপি’র যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম সরোয়ার জমাদ্দার, ইন্দুরকানি উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি এডভোকেট মতিউর রহমান, টুঙ্গীপাড় উপজেলা আওয়ামী লীগের দপ্তর সম্পাদক হফিজুর রশীদ তারেক, ইন্দুরকানি উপজেলা জেপি’র সহ সভাপতি মোকাররম হোসেন কবির, সহ-সভাপতি কাওছার আহমেদ দুলাল, যুবলীগের সভাপতি আব্দুর রাজ্জাক, সাধারণ সম্পাদক ইকরামুল সিকদার, দুঃস্থ কল্যাণ সংস্থার নেত্রী শারমীন হোসেন, যুব সংহতির উপজেলা সভাপতি রিয়াজ মাহমুদ প্রমুখ।
ভান্ডারিয়া প্রতিনিধি জানান :
বৃহস্পতিবার দুপুরে ভান্ডারিয়া মজিদা বেগম মহিলা কলেজের বার্ষিক পুরস্কার বিতরণী ও সাংস্কৃতিক অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসাবে বক্তব্য রাখেন। এ সময় মন্ত্রী ক্রীড়া ও সাংস্কৃতিক প্রতিযোগিতায় বিজয়ীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন।
কলেজের অধ্যক্ষ মোশাররফ হোসেন মামুনের সভাপতিত্বে এ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসাবে উপস্থিত ছিলেন সাবেক উপজেলা চেয়ারম্যান ও উপজেলা জেপি’র আহ্বায়ক মনিরুল হক মনি জোমাদ্দার, উপজেলা চেয়ারম্যান আতিকুল ইসলাম তালুকদার উজ্জল, ইউএনও শাহীন আক্তার সুমী, উপজেলা ভাইস চেয়ারম্যান মিরাজুল ইসলাম, উপজেলা মহিলা ভাইস চেয়ারম্যান আসমা আক্তার, বিশিষ্ট মুক্তিযোদ্ধা খান এনায়েত করিম, জেপি যুগ্ম আহ্বায়ক গোলাম সরওয়ার জোমাদ্দার, উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি ফায়জুর রশিদ জোমাদ্দার খসরু, ইউপি চেয়ারম্যান মুজিবুর রহমান চৌধুরী, ইউপি চেয়ারম্যান খান একরামুল কবির পান্না, ইউপি চেয়ারম্যান হুমায়ুন কবির, জেলা পরিষদ সদস্য আব্দুল হাই হাওলাদার প্রমুখ।
বিকালে পানি সম্পদ মন্ত্রী ভান্ডারিয়া পৌরসভা বাসষ্ট্যান্ড হতে সড়ক ও ড্রেন নির্মাণ কাজ, খাদ্য গুদাম থেকে ব্রাক অফিস পর্যন্ত এবং কলোনীবাজার থেকে সড়ক নির্মাণ কাজের উদ্বোধন করেন। মন্ত্রী এসময় পৃথকভাবে দোয়া ও মোনাজাতে অংশ নেন।
সকালে পানি সম্পদ মন্ত্রী ভান্ডারিয়ার বিদু্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের গ্রীড লাইন স্টেশন পরিদর্শন করেন। এসময় পিডিবি’র বরিশালের তত্ত্বাবধায়ক প্রকৌশলী উপস্থিত ছিলেন।
