পাইকগাছায় শহীদ জিয়া বালিকা বিদ্যালয়ে ভূয়া নিয়োগপত্রে যোগদান চেষ্টা
ভূয়া নিয়োগপত্র নিয়ে মো. মনিরুজ্জামান পাইকগাছার শহীদ জিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক পদে যোগদান করতে গিয়ে ব্যর্থ হয়ে ফিরে যান। বাতিল হওয়া নিয়োগ প্রক্রিয়ার ১১ মাস পর অবৈধ রেজুলেশন দেখিয়ে বিতর্কিত প্রধান শিক্ষক পদে মনিরুজ্জামানের যোগদান চেষ্টার অভিযোগ উঠেছে সভাপতি ও তার অনুসারীদের বিরুদ্ধে।
বুধবার সকাল পৌনে ১০টার দিকে সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম নিজেই ও ম্যানেজিং কয়েকজন সদস্যকে নিয়ে বিদ্যালয়ে প্রবেশ করে প্রধান শিক্ষকের কার্যালয়ে ঢুকে পরিপত্র ছাড়াই মনিরুজ্জামানকে প্রধান শিক্ষক পদে যোগদানপত্র গ্রহণ করেন। এ সময় ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অঞ্জলী রাণী শীল আপত্তি তুলে মন্ত্রণালয়ের নির্দেশনার আলোকে নিয়োগ সংক্রান্ত কাগজপত্র ছাড়া তাকে যোগদান করাতে পারবেন না বলে সাফ জানিয়ে দিলে যোগদান চেষ্টায় ব্যর্থ হয়।
এদিকে অবৈধ উপায়ে যোগদান চেষ্টার ঘটনায় অপরাপর কমিটির সদস্য, অভিভাবক ও খোদ শিক্ষার্থীদের মধ্যে তীব্র প্রতিক্রিয়া দেখা দিয়েছে। এ নিয়ে দু’পক্ষই মুখোমুখি অবস্থানে রয়েছে বলে জানা গেছে।
সংশ্লিষ্ট সূত্রে জানা গেছে, গত বছরের ২৩ ও ২৪ ফেব্রুয়ারিতে শহীদ জিয়া মাধ্যমিক বালিকা বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষকের শূন্যপদে নিয়োগের জন্য বিজ্ঞপ্তি প্রকাশ হয়। ১৪ আবেদনকারীর মধ্যে গত বছরের ৩ আগস্ট ১০ জন নিয়োগ প্রত্যাশী পরীক্ষায় অংশ নিলে সংশ্লিষ্ট নিয়োগ বোর্ড মাদরাসা শিক্ষক মোঃ মনিরুজ্জামানকে প্রথম স্থান করে নিয়োগের জন্য সুপারিশ করলে সভাপতি ছাড়া এর বিরুদ্ধে অন্য সদস্যরা বিরোধিতা করে। ম্যানেজিং কমিটির অন্য সদস্যরা এ নিয়োগ পরীক্ষা তঞ্চকীসহ সভাপতি রফিকুল ইসলামের বিরুদ্ধে ব্যাপক অর্থ বাণিজ্যের অভিযোগ তুলে এ নিয়োগ পক্রিয়া বাতিল ও সভাপতির অপসারণের দাবী করে ঐ বছরের ১২ আগস্ট সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয়সহ বিভিন্ন দপ্তরে অভিযোগ করলে তদন্ত শুরু হয়।
জানা গেছে, পরবর্তীতে সভাপতি ও ৪ সদস্য ম্যানেজ হয়ে সর্বশেষ চলতি বছরের ১৭ জানুয়ারি সভা দেখিয়ে এবং ২২ জানুয়ারি নিয়োগের জন্য মনিরুজ্জামানকে নিয়োগপত্র দিলে বুধবার সকালে বিদ্যালয়ে যোগদান করতে যান। এ সময় আপত্তি তুলে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অঞ্জলী রাণী শীল বলেন, নিয়োগ সংক্রান্ত যোগদানের বিষয়ে গত বছরের ১২ আগস্ট তারিখের পর এ পর্যন্ত কোন সভা হয়নি এবং মনিরুজ্জামান চাকরিরত প্রতিষ্ঠান থেকে ছাড়পত্রও আনেননি। বিদ্যালয়ের কোন রেজুলেশন ছাড়াই এ যোগদানপত্র বৈধ নয় বলে তিনি জানান।
এ বিষয়ে খুলনা উচ্চ মাধ্যমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের সহকারী পরিচালক মো. সিরাজুল ইসলাম সভাপতির বিরুদ্ধে নিয়োগ সংক্রান্ত বিষয়ে বিভিন্ন ত্রুটির কথা স্বীকার করে প্রতিবেদন জমা দিয়েছেন বলে জানিয়েছেন।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার সংশ্লিষ্ট দপ্তরের উদ্বৃতি দিয়ে তিনি এ বিষয়ে তদন্ত করছেন। অবৈধ উপায়ে এ ধরণের যোগদানের কোন সুযোগ নেই এবং এ কাজে যারা সহযোগিতা করছেন সংশ্লিষ্টদের বিরুদ্ধে আইনী ব্যবস্থা নেয়া হবে বলে তিনি জানিয়েছেন।
অবৈধ যোগদান বিষয়ে জানতে চাইলে বিদ্যালয়ের সভাপতি শেখ রফিকুল ইসলাম বলেন, নিয়মের মধ্যে থেকে প্রধান শিক্ষক নিয়োগ দেয়া হয়েছে।
