বাগেরহাট প্রতিনিধি :  

ঢাকার ইডেন কলেজের ছাত্রী শরীফা সুলতানা পুতুল (২২) হত্যার মামলায় মৃত্যুদন্ডপ্রাপ্ত আসামী স্বামী মোঃ মাহামুদুল আলম সিকদারকে গ্রেফতার করেছে র‌্যাব-৬।

সোমবার রাতে সাতক্ষীরা জেলা সদরের বাসষ্ট্যান্ড এলাকা থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আজ মঙ্গলবার দুপুরে বাগেরহাট সার্কিট হাউজে আয়োজিত এক প্রেস ব্রিফিং-এ র‌্যাব-৬ এর অধিনায়ক খন্দকার রফিকুল ইসলাম সাংবাদিকদের একথা জানান। র‌্যাব সদস্যরা পরে তাকে বাগেরহাটের মোল্লারহাট থানায় হস্তান্তর করেন। মাহামুদুল বাগেরহাটের মোল্লারহাট উপজেলার উদয়পুর দৈবকান্দি গ্রামের মৃত সামছুল আলম শিকদারের ছেলে।

স্ত্রী শরীফা সুলতানা পুতুলকে জবাই করে হত্যার দায়ে বাগেরহাট জেলা ও দায়রা জজ মোঃ মিজানুর রহমান খান ২০১৬ সালের ১২ মে মোঃ মাহামুদুল আলম শিকদারকে (৩৬) ফাঁসিতে ঝুলিয়ে মৃত্যুদন্ডের আদেশ দেন। বিচার চলাকালে জামিনে থাকা মাহামুদুল রায় ঘোষণার দিন আদালতে উপস্থিত না হয়ে আত্মগোপণ করেন।

র‌্যাব-৬ এর অধিনায়ক খন্দকার রফিকুল ইসলাম জানান, মাহামুদুল আলম শিকদার দেশের সীমান্তবর্তী জেলা সাতক্ষীরা থেকে অবৈধভাবে পার্শ্ববর্তি রাষ্ট্রে পালিয়ে যাবার পরিকল্পনা করেছিলেন। র‌্যাব এর গোয়েন্দারা গোপন তথ্যের ভিত্তিতে তাকে গ্রেফতার করতে সাতক্ষীরা বাসষ্ট্যান্ডে অবস্থান নেন এবং তাকে গ্রেফতার করতে সক্ষম হন।

বাগেরহাট আদালত ও মোল্লারহাট থানায় দায়ের হওয়া মামলার নথি থেকে জানা যায়, শরীফা সুলতানা পুতুল ঢাকার ইডেন বিশ্ববিদ্যালয় কলেজের ইতিহাস (সম্মান) বিভাগের তৃতীয় বর্ষের ছাত্রী ছিলেন। পুতুলের বড় বোন সাগরিকার বিয়ে হয়েছিলো মাহামুদুলের বড় ভাই শাইকুল ইসলামের সাথে। সেই সুবাদে মাহামুদুলের সাথে পুতুলের পরিচয় ঘটে এবং তাদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। এক পর্যায়ে তারা পালিয়ে বিয়ে করেন। পরে ২০১৩ সালের ১০ মে পারিবারিকভাবে তাদের বিয়ে হয়। বিয়ের তিন দিন পর ১৩ মে গভীর রাতে মাহামুদুল নিজ বাড়ির শয়নকক্ষে পুতুলকে জবাই করে হত্যা করেন এবং রাতেই মোল্লারহাট থানায় গিয়ে স্ত্রীকে হত্যার কথা স্বীকার করে আত্মসমর্পণ করেন। এ সময় সে কীটনাশক পান করে আত্মহত্যারও চেষ্টা করেন। ঐ রাতেই পুলিশ তার ঘর থেকে পুতুলের লাশ উদ্ধার করে। পরদিন নিহত পুতুলের বাবা মোঃ আবু দাউদ পুতুলের স্বামী মাহামুদুলের বিরুদ্ধে মোল্লারহাট থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন।

Please follow and like us: