প্রধান সূচি

আইন হাতে তুলে নেয়ার বিপজ্জনক প্রবণতা বন্ধ করুন

দিন দিন আইন হাতে তুলে নেয়ার বিপজ্জনক প্রবণতা বৃদ্ধি পেয়েছে। সামান্য উসিলায় কখনো জনপ্রতিনিধি, কখনো স্থানীয় প্রভাবশালী ব্যক্তিরা সালিশ ও বিচারের নামে তাদের প্রতিহিংসা চরিতার্থ করছে প্রতিপক্ষের ওপর। এই প্রবণতা বন্ধে কঠোর ব্যবস্থা নিতে হবে। নইলে আইনের শাসনের ক্ষেত্রে তা এক বিরাট প্রতিবন্ধক হয়ে থাকবে।
রাজশাহীর দুর্গাপুরে দুই কিশোরকে গাছে বেঁধে নির্যাতন করা হয়েছে। ছাগল চুরির অভিযোগে এই শাস্তি দেয়া হয় তাদের। ঘটনায় ইউনিয়ন পরিষদের দুই সদস্যকে গ্রেফতার করা হয়েছে। গত বৃহস্পতিবার দুপুর ১২টার দিকে উপজেলার আমগাছি এলাকা থেকে তাদের গ্রেফতার করে দুর্গাপুর থানা পুলিশ।
অপরদিকে গত বুধবার ঝালকাঠিতে মোবাইল ফোন চুরির অভিযোগে মা-মেয়েকে গাছের সাথে বেঁধে বাঁশ দিয়ে পেটানো হয়েছে। নির্যাতনকারীদের ক্রোধ থেকে রক্ষা পায়নি দুই বছরের শিশুও। তার মাথায় আঘাত লেগেছে। আহতদের সবাই এখন ঝালকাঠি সদর হাসপাতালের ভর্তি রয়েছে।
সিলেটের শিশু রাজনকে পিটিয়ে হত্যার পর সারাদেশে তোলপাড় সৃষ্টি হয়। এরপর খুলনার রাকিবসহ আরো নির্যাতনের খবর গণমাধ্যমে আসে। এ ধরনের পৈশাচিক, ববর্র ও অমানবিক নির্যাতন যে বন্ধ হয়নি তা তো রাজশাহী ও ঝালকাঠির ঘটনা দুটোই বলে দিচ্ছে। অবস্থা দৃষ্টে মনে হচ্ছে ক্রমেই হিংস্র হয়ে উঠছে সমাজ। মানবিকতা, পারস্পরিক প্রীতির বন্ধন, মূল্যবোধ সব যেন হারাতে বসেছে। এক অমানবিক উন্মত্ততা যেন ঘিরে ধরেছে চারপাশ।
একটি সুস্থ সমাজে এ ধরনের বর্বরতা চলতে পারে না। কোনো অপরাধ হয়ে থাকলে আইন অনুযায়ী তার শাস্তি হবে। তাই বলে যেখানে সেখানে বিচার শালিসের নামে আদালত বসানো, প্রকাশ্যে অমানবিক শাস্তি ঘোষণা এবং তা কার্যকর করা কোনো অবস্থায়ই কাম্য হতে পারে না। সবচেয়ে দুঃখজনক হচ্ছে জনপ্রতিধিরাও এ ধরনের বেআইনি কর্মকান্ডের সাথে যুক্ত হচ্ছেন। এর প্রতিকার হওয়া জরুরি। সমাজে আইনের শাসনের ব্যত্যয় হয়ে পড়ার কারণেই এ ধরনের প্রবণতা দেখা দিচ্ছে। কাজেই আইনের শাসন প্রতিষ্ঠা করেই এই অপতৎপরতা বন্ধ করতে হবে। সেক্ষেত্রে আইন শৃঙ্খলা বাহিনীকে এ ব্যাপারে আরো সতর্ক হতে হবে। পাশাপশি সামাজিক আন্দোলনের মাধ্যমেও এ ধরনের বিপজ্জনক প্রবণতা রোধ করার জন্য সকলকে এগিয়ে আসতে হবে।

Please follow and like us:





উত্তর দিন

Wordpress Social Share Plugin powered by Ultimatelysocial