প্রধান সূচি

ইসলামের নামে যারা জঙ্গী সন্ত্রাসাদের রাজনীতি করে তারা ইসলামের শত্রু, তারা দেশের শত্রু …. ডেপুটি স্পীকার

মোঃ হাবিবুল্লাহ, স্বরূপকাঠী :

জাতীয় সংসদের ডেপুটি স্পীকার মোঃ ফজলে রাব্বী মিয়া এমপি বলেছেন, যারা ইসলামের নামে দেশে জঙ্গী ও সন্ত্রাসবাদের রাজনীতি করে তারা ইসলামের শত্রু দেশের শত্রু। তিনি দরবার শরীফের মাহফিলে আসা লাখো মানুষের কাছে প্রশ্ন করেন, এমন কোন খাদেম বা ঈমানদার বান্দা আছেন, যারা এই জঙ্গীবাদকে সমর্থন করেন ? সন্ত্রাসবাদকে সমর্থন করেন ? তখন উপস্থিত মুসুল্লিরা ‘না না’ রব উচ্চরিত করেন।

আজ সোমবার জেলার স্বরূপকাঠী উপজেলার নেছারাবাদের ছারছিনা দরবার শরীফ ও মাদ্রসার তিন দিনব্যপী বার্ষিক ইসালে ছওয়াব মাহফিলে জোহর নামাজবাদ আখেরী মোনাজাত পূর্ব প্রধান মেহমান হিসেবে দেয়া বক্তব্যে তিনি এসব কথা বলেন।

ডেপুটি স্পীকার বলেন, ইসলামের নামে একটি গোষ্ঠি জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করে চলছে। তারা বিভিন্ন সময় বিভিন্ন নামে আত্মপ্রকাশ করে সমাজে অস্থিরতা সৃষ্টির চেষ্টা করছে। জাতির জনকের কন্যা প্রধানমন্ত্রী জননেত্রী শেখ হাসিনার নেতৃত্বে বর্তমান সরকার ওইসব মতলববাজদের সকল অপকর্ম একের পর এক প্রতিহত করে চলেছেন। ওইসব মতলবাজ ও তাদের সমর্থনকারীদের থেকে সজাগ থাকার আহ্বান  জানিয়ে ডেপুটি স্পীকার বলেন পৃথিবীর কোন অপশক্তি বাংলার মানুষকে বিভ্রান্ত করতে পারেনি। ভবিষ্যতেও পারবে না ইনশাল্লাহ।

জেলার স্বরূপকাঠীতে ছারছিনা দরবার শরীফের বার্ষিক ইছালে ছওয়াব মাহফিলের শেষ দিনে আখেরী মোনাজাতে অংশ নেন পিরোজপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান ও পিরোজপুর জেলা আওয়ামী লীগের সাংগঠনিক সম্পাদক মোঃ মহিউদ্দিন মহারাজ। গতকাল সোমবার ছারছিনা দরবার শরীফের আখেরী মোনাজাত শেষে তোলা। – পিরোজপুর কন্ঠ।

মাহফিলের আখেরী মোনাজাত পূর্ব বয়ানে ছারছীনা শরীফের পীর সাহেব শাহ মোঃ মোহেবুল্লাহ বলেন, ইসলাম শান্তির ধর্ম। হানাহানি সন্ত্রাস ইসলাম অনুমোদন করে না। ছারছিনা দরবার শরীফের প্রতিষ্ঠাতা শাহ সুফি নেছার উদ্দিন (র) বাংলার মানুষকে হিন্দুত্ববাদ ও গোমরাহী থেকে ফিরিয়ে আল্লাওয়ালা বানানোর ব্রত নিয়ে কাজ করেছেন। বাংলার মুসলমানরা যখন ইসলামের হুকুম আহকাম ভুলে যাচ্ছিল তখন তিনি ইসলামের আদর্শে জীবন গড়ার শিক্ষা দেওয়ার জন্য ছারছীনায় প্রতিষ্ঠা করেন ছোট্ট একটি মাদ্রাসা। এই মাদ্রাসা ঝিমিয়ে পড়া ইসলামী জগতের মানুষের মধ্যে নতুন প্রানের সঞ্চার করেছিল। সে সময় থেকে আজ পর্যন্ত গোটা দেশে হাজার হাজার মাদ্রাসা মসজিদ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। সৃষ্টি হয়েছে লাখ লাখ ধর্মপ্রান মুসলমান।

তিনি বলেন, বর্তমানে সমাজে ফ্যাতনা ফ্যাসাদ বেড়ে গেছে। এ থেকে নিজকে, নিজের পরিবার, সমাজ তথা দেশকে রক্ষা করতে হবে। সেজন্য অলি আউলিয়াদের দরবারে যেতে হবে। ইসলামের সঠিক ব্যাখ্যা শুনতে হবে। নিজের সন্তানকে ইসলামী আদলে গড়তে হবে। ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে যদি সঠিক পথে পরিচালিত করা না য়ায় তাহলে আমরা অপরাধী হয়ে যাব। সবদিক বিবেচনায় রেখে সকলকে সজাগ থাকার অহ্বান জানান তিনি।

মাহফিলে বিশেষ মেহমানের বক্তব্যে প্রধানমন্ত্রী’র বেসরকারী খাত উন্নয়ন বিষয়ক উপদেষ্টা সালমান এফ রহমান বলেন, দেশে একদল লোক নিজদেরকে মুসলমান দাবী করে কোরআন-হাদিসের ভ্রান্ত ব্যাখ্যা দিয়ে মানুষকে বিভ্রান্ত করছেন। তারা কোন অবস্থাতেই ইসলামের সুহৃদ হতে পারেনা। বর্তমান সরকারে মাননীয় প্রধানমন্ত্রী বঙ্গবন্ধু কন্যা শেখ হাসিনার সময়োচিত পদক্ষেপে দেশ থেকে জঙ্গিবাদ নির্মূল হবে ইনশাল্লাহ।

ধর্ম বিষয়ক মন্ত্রনালয় সম্পর্কিত সংসদীয় কমিটির সভাপতি অলহাজ্ব বজলুর রহমান হারুন এমপি বলেন বঙ্গবন্ধু ইসলামের খেদমত করেছেন। তিনি বন্ধ হওয়া ছারছীনা মাদ্রাসা চালু করার জন্য মাওলানা তর্কবাগিশ, মন্ত্রী জহুর আহম্মদ চৌধুরীকে ছারছীনায় পাঠিয়ে এ মাদ্রাসা চালু করার ব্যবস্থা করেছিলেন। তার সুযোগ্য কন্যা মাদ্রাসার সুপার-অধ্যক্ষদের মর্যাদা বৃদ্ধি, বহু মাদ্রাসা এমপিওভুক্ত করে দেশের মাদ্রাসা শিক্ষার প্রসার ঘটিয়েছেন। অন্যদিকে, বিএনপি জামাত জোট মিলে ধর্মের দোহাই দিয়ে দেশে জঙ্গিবাদ সৃষ্টি করেছে। একটি মাদ্রাসাও তারা এমপিওভুক্ত করেনি।

সাবেক স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী মোঃ সামসুল হক টুকু এমপি বলেন, ধর্মের নামে মানুষ খুন করা ইসলাম অনুমোদন করেনা। বাংলার জমিনে জঙ্গিবাদের কোন স্থান হবে না।

পিরোজপুর-১ আসনের সংসদ সদস্য একেএমএ অউয়াল বলেছেন, ছারছীনা দরবার কখনো সন্ত্রাসীদের পছন্দ করেনা। একদল লোক দরবারের ক্ষতি করতে চায়। কোন ষড়যন্ত্রই এ দরবারের ক্ষতি করতে পারবে না। তারপরেও কুচক্রীদের হাত থেকে দরবারকে রক্ষা করার দায়িত্ব আমাদের সকলকে নিতে হবে।

আওয়ামী লীগের তথ্য ও গবেষনা সম্পাদক এডভোকেট আফজাল হোসেন, বলেন আওয়ামী লীগ ইসলামের নাম ভাঙ্গিয়ে ফায়দা লোটে না। আমাদের নেত্রী প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা একজন মুসলিম নারী। তিনি গলাবাজি করে নয়, সত্যিকারভাবেই ইসলামের খেদমত করেন।

মাহফিলে আরও বক্তৃতা রাখেন অমিন মোহাম্মদ গ্রুপের চেয়ারম্যান মোঃ এনামুল হক, বরিশালের বিভাগীয় কমিশনার আলহাজ্ব মোঃ গাউস।

এ সময় উপস্থিত ছিলেন, পিরোজপুরের জেলা প্রশাসক মোঃ খায়রুল আলম শেখ, পিরোজপুর জেলা পরিষদ চেয়ারম্যান মহিউদ্দিন মহারাজ, পিরোজপুরের পুলিশ সুপার মোঃ ওয়ালিদ হোসেন, অতিরিক্ত পুলিশ কমিশনার আবুল কালাম আজাদ, স্বরূপকাঠী পৌরসভার মেয়র মোঃ গোলাম কবির।

মাহফিলে আখেরী মোনাজাত পরিচলনা করেন আমীরে হিযবুল¬াহ ছারছীনা শরীফের পীর ছাহেব আলহাজ্ব মাওলানা শাহ্ মোহাম্মদ মোহেব্বুল¬াহ (মাঃজিঃআঃ)।

মোনাজাতে লক্ষ লক্ষ ভক্ত মুরিদানের আল্লাহুম্মা আমিন ধ্বনিতে স্বরূপকাঠীর সন্ধা নদীর তীরে ছারছীনা দরবার শরীফ মুখরিত হয়ে ওঠে।

Please follow and like us:





উত্তর দিন

Wordpress Social Share Plugin powered by Ultimatelysocial